অ্যানড্রয়েড ফোন কেনার আগে করণীয়


প্রকাশিত: ০৯:৪৫ এএম, ১৭ মে ২০১৫

প্রথমবার অ্যানড্রয়েড ব্যবহার করতে গিয়ে খুঁটিনাটি কিছু ঝামেলায় পড়েন অনেকে। তাই এ ফোন কেনার আগে কিছু বিষয় জেনে রাখলে এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়-

১. অনেকের ফোনে ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, মোবাইল ডাটার মতো সুবিধাগুলো সব সময়ের জন্য চালু থাকে। এতে ডিভাইসের চার্জ দ্রুত ক্ষয় হয়। ব্যবহার করার পর এসব বন্ধ করে রাখলে ব্যাটারির ব্যাকআপ আগের চেয়ে অনেকখানি বেড়ে যাবে। এ ছাড়া থ্রিজি নেটওয়ার্ক প্রচুর চার্জ ক্ষয় করে। যেসব সিমে থ্রিজি সুবিধা নেই সেসব হ্যান্ডসেটে নেটওয়ার্ক সেটিংস থেকে `টুজি অনলি` নির্বাচন করে দিলে ব্যাটারির চাজ ক্ষয় কম হবে। ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্রাইটনেসও ব্যাকআপ কমে যাওয়ার আরেক কারণ। যতটা সম্ভব কম ব্রাইটনেস নির্বাচন করুন। হ্যান্ডসেটে লাইট সেন্সর থাকলে `অটো ব্রাইটনেস` ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো। লাইভ ওয়ালপেপার ও ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকা অ্যাপ্লিকেশন ব্যাটারির অনেকটা শক্তি ক্ষয় করে।

২. ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া অ্যানড্রয়েডের আসল সুবিধাগুলো পাওয়া যায় না। তাই অ্যানড্রয়েড হ্যান্ডসেট কিনলে সঙ্গে অবশ্যই ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধার সিম নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে থ্রিজি বাছাই করাটা ভালো। তাতে ইন্টারনেটের গতি ভালো পাওয়া যাবে। ইন্টারনেট নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত ১ গিগাবাইটের প্যাকেজ বাছাই করা ভালো। এতে স্বাচ্ছন্দ্যে অ্যানড্রয়েডের সুবিধাগুলো উপভোগ করা যাবে।

৩. অ্যানড্রয়েড ব্যবহার করতে হলে গুগল অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। কেননা গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই `প্লে স্টোর` থেকে অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করা, তথ্য ব্যাকআপ ও রিস্টোর করতে হবে। ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করার পর হ্যান্ডসেট থেকেই গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করাটাই হবে প্রথম কাজ। যদি আগে থেকেই আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তাহলে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে লগ ইন করেও `প্লে স্টোর`-এর সুবিধা পাওয়া যাবে। অ্যানড্রয়েড ডিভাইসের সব রকম সুবিধা পেতে গুগল অ্যাকাউন্টের বিকল্প নেই।

৪. লাখ লাখ ফ্রি অ্যানড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের বিশাল ভাণ্ডার হচ্ছে `প্লে স্টোর`। গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করার পর এখান থেকেই প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করে নিতে হবে। বিশেষ কিছু কাজে পেইড অ্যাপ্লিকেশন (টাকা দিয়ে কিনতে হয় যেসব অ্যাপ্লিকেশন) ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। ফ্রি অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি প্লে স্টোর থেকে পেইড অ্যাপ্লিকেশনও কেনা যাবে। তবে অধিকাংশ পেইড অ্যাপ্লিকেশনেরই বিকল্প ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন আছে। অনেকে আবার প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল না করে বিভিন্ন অপরিচিত সাইট থেকে অ্যানড্রয়েডের এপিকে (অ্যাপ্লিকেশন প্যাকেজ ফাইল) নামিয়ে ইনস্টল করেন। এতে ডিভাইসের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। সে জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করাটাই সবচেয়ে নিরাপদ হবে।

৫. অ্যানড্রয়েড হ্যান্ডসেট ব্যবহারের আরেক বড় সুবিধা হলো, এতে ইনস্টল করা অ্যাপ্লিকেশনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ (আপডেট) হয়। তবে হ্যান্ডসেটে সীমিত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ থাকলে অটোমেটিক আপডেট চালু না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে গুগল প্লে স্টোরের সেটিংস থেকে `অটোমেটিক আপডেট` বন্ধ করে দিতে হবে। আনলিমিটেড ইন্টারনেট থাকলে সুবিধাটি চালু রাখতে পারেন।

৬. বর্তমানে অনেক ডিভাইসে বিভিন্ন ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করা হয়। তবে অ্যানড্রয়েডের জন্য `স্টক ইউজার` ইন্টারফেসই বেশি জনপ্রিয়। অ্যানড্রয়েডের স্টক ইউজার ইন্টারফেসের মূল আকর্ষণ হলো এর `নোটিফিকেশন বার`। এই বারটি স্লাইড করলেই `মিসকল`, `এসএমএস`, `সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ`, `মেসেঞ্জার`, `অ্যাপ্লিকেশন আপডেট` ইত্যাদির সব নোটিফিকেশন দেখা যায়। এ ছাড়া ডানে ও বামে স্লাইড করে নোটিফিকেশনগুলো ক্লিয়ার করা যায়। অনেক ডিভাইসে নোটিফিকেশন বারে ডিভাইস কনট্রোলার সেটিংস থাকে। সেখান থেকে সরাসরি ব্রাইটনেস কমানো-বাড়ানো ছাড়াও ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, অটো রোটেশন চালু কিংবা বন্ধ করার মতো ছোটখাটো কাজও করা যাবে।

৭. হোমস্ক্রিনে যেকোনো অ্যাপ্লিকেশনের শর্টকাট কিংবা উইজেট রাখতে মেন্যু থেকে অ্যাপ্লিকেশনটির ওপর কিংবা উইজেটটির ওপর প্রেস করে ধরে রাখুন, এরপর সেটি ড্রাগ করে হোমস্ক্রিনের নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন। রিমুভ করতেও একইভাবে প্রেস করে ধরে রাখুন এবং সেখান থেকে রিমুভ অপশনটি বাছাই করুন। এ ছাড়া হোমস্ক্রিনে বেশি অ্যাপ্লিকেশন দেখতে আপনার ভালো না লাগলে কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে একটি ফোল্ডার তৈরি করতে পারেন। এ জন্য আপনাকে হোমস্ক্রিনের একটি অ্যাপ্লিকেশনের ওপর আরেকটি অ্যাপ্লিকেশন ড্রাগ করে ছেড়ে দিতে হবে। তাহলেই দুই বা ততোধিক অ্যাপ্লিকেশন মিলে একটি ফোল্ডার তৈরি হয়ে যাবে।

৮. একসঙ্গে একাধিক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করাকে `মাল্টিটাস্কিং` বলে। স্মার্টফোনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এই মাল্টিটাস্কিং সুবিধা। এ সুবিধা পেতে ফোনের হোম বাটনটি চেপে ধরতে হবে। ফলে ফোনে চালু থাকা সব অ্যাপ্লিকেশন একসঙ্গে দেখা যাবে। যেই অ্যাপ্লিকেশনটি নিয়ে কাজ করতে চান সেটি নির্বাচন করে কাজ শুরু করা যাবে। আবার কিছু কিছু ডিভাইসে নেভিগেশন বার থাকে। সেখানে হোম বাটন ছাড়া মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্যও আলাদা বাটন থাকে।

১০. অ্যানড্রয়েডের আরেক জনপ্রিয় সুবিধা `গুগল নাও`। এর মাধ্যমে ফোন স্পর্শ না করে কেবল ভয়েস কমান্ড (কথা বলে) ব্যবহার করেই এসএমএস পাঠানো, কল করা, ম্যাপের সাহায্যে লোকেশন সার্চ করা, ওয়েবে কিছু সার্চ করা যায়। শুধু ওয়েব নয়, ডিভাইসে থাকা কনট্যান্টগুলোও একইভাবে সার্চ করা যাবে। অ্যানড্রয়েডের `গুগল সার্চ` ও `ভয়েস সার্চ` ফিচারেও একই ধরনের সুবিধা রয়েছে।

এইচএন/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।