ছোলা কেন খাবেন
ছোলাভুনা ছাড়া আমাদের ইফতার যেন অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপের সঙ্গে ছোলাভুনা মিলিয়ে না খেলে ইফতারকে ঠিক যেন ইফতারই মনে হয় না! শুধু রমজান মাসেই বেশি খাওয়া হয় এই ছোলা। তবে এটি বেশ পুষ্টিকর ও গুণে ভরা। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতায় সারাবছরই আপনি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন এই শস্যটি। সাধারণত দুই প্রকারের ছোলা পাওয়া যায়- দেশি ছোলা ও কাবুলি ছোলা। দেশি ছোলা আকারে ছোট, একটু কালচে রংয়ের এবং অপেক্ষাকৃত শক্ত। কাবুলি ছোলা একটু বড় আকারের, উজ্জ্বলতর রং এবং দেলি ছোলার চেয়ে নরম।
ইফতারিতে আমরা যে ছোলা খাই তা মূলত দেলি ছোলা। কাবুলি ছোলা জন্মায় আফগানিস্তান, দক্ষিণ ইউরোপ- এসব স্থানে। ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উত্স। ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংস বা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন- নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। খাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়িই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে রক্তে চলে যায় না। বেশ সময় নেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগই পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
প্রোটিণ, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরও আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। এসবই শরীরের জন্য কাজে লাগে।
ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠ কাঠিন্যে উপকারী। খাবারের আঁশ হজম হয় না। এভাবেই খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। তাই পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এবং পায়খানা নরম থাকে। এতে কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। পায়খানা করা সহজ হয়। নিয়মিত পায়খানা হয়ে যায় বলে ক্ষতিকর জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না। ফলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে।
রক্তের চর্বি কমাতেও সহায়ক খাদ্যের আঁশ। আরও নানান শারীরিক উপকার আছে খাদ্য-আঁশে। দেরিতে হজম হয়, এরকম একটি খাবার হচ্ছে ছোলা। শরীরে শক্তির যোগান দিতে থাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে পাওয়া যায় ৩৬০ ক্যালরিরও অধিক শক্তি।
এইচএন/পিআর