সতর্ক থাকুন অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণে


প্রকাশিত: ০৫:৫৯ এএম, ০১ এপ্রিল ২০১৫

আমরা অনেকেই আছি যারা কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করে থাকি। যা মোটেও ঠিক নয়। অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দেখা যায় জ্বর কিংবা ছোটখাটো ব্যথা হলে নিজেরাই হয়ে উঠি ডাক্তার। সরাসরি চলে যাই যে কোনো মেডিসিনের দোকানে। কিনে খেয়ে ফেলি অ্যান্টিবায়োটিক। বিভিন্ন রকম বা গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে।

আবারও সেই কথা বলে নিচ্ছি, অ্যান্টিবায়োটিক অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাওয়া উচিত। অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মুখে খাবার ফলে স্ট্রেপটোমাইসিন পাকস্থলী বা অন্ত্র থেকে রক্তে প্রবেশ করে না বললেই চলে এবং এই কারণে বিষক্রিয়া হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশনে স্ট্রেপটোমাইসিন চিকিৎসার অটোটেক্সিসিটি অর্থাৎ মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরান, মাথাব্যথা, খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব হওয়া, যেমন মুখ বা মুখের ভিতরে জ্বালাপোড়া করা, শরীরে সুচালো কোনো জিনিসের ফোটানোর ব্যথা অনুভব করা। অষ্টম মস্তিষ্ক স্নায়ুর (ক্রেনিয়াল নার্ভের) ওপর স্ট্রেপটোমাইসিনের প্রতিক্রিয়া অনেক সময় এরূপ প্রবল বিষক্রিয়ার পুরো ধারণ করতে পারে।

এই এরকম অবস্থায় রোগীর সোজা হয়ে হাঁটার ক্ষমতা থাকে না। যেমন উঁচুনিচু ও যে কোনো জায়গা, অন্ধকার জায়গা দিয়ে হাঁটার সময় নিজের শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাঁটতে পারে না। এরকম অবস্থায় অনেক বয়সের রোগীর ভিতর অধিক পরিমাণ দেখা যায়। পরিমাণে অনেক এবং বেশি দিন এই স্ট্রেপটোমাইসিন গ্রহণের ফলে এরকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় কানের ভিতর একটানা শব্দ হতে পারে ও কানে নাও শুনতে পারে। এই ওষুধ বন্ধ না করা হলে কানে শোনার মতো ক্ষমতা আর ফিরে আসে না।

এদিকে আইসোনিয়াজিডের প্রতিক্রিয়া খুবই কম। যে সব রোগীর শরীরে আইসোনিয়াজিডের পরিবর্তন ধীরে ধীরে হয়ে থাকে তাদের ঘুম কমে যাওয়া, মাংসপেশিতে নিজ থেকে দপদপ করে কাঁপতে থাকা, অনেক সচেতনতা, খিঁচুনি প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলো স্নায়ুবিক উপসর্গ শরীরে পাইরিডক্সিন ভিটামিন (বি) অভাবের কারণে হতে পারে।

পাইরিডক্সিন দিলে লক্ষণগুলো প্রকাশিত হয় এবং এতে আইসোনিয়াজিডের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয় না। আইসোনিয়াজিডের অন্যান্য প্রতিক্রিয়ার ভিতর রয়েছে খাবারে অনীহা, বমি বা বমি বমি ভাব, পাকস্থলী ও অন্ত্রের অসুবিধা, হেপাটাইসিস, জণ্ডিস, রক্ত কমে যাওয়া, জ্বর, শরীরে ফুসকুড়ি প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। মৃগী বা মদ পান করে এমন ব্যক্তি বা বৃক্ব ও যকৃতের রোগীর জন্য আইসোনিয়াজিড দিতে সতর্কতার প্রয়োজন।

অন্যদিকে রিফামপিসিন খুব সহজে শরীরে মানিয়ে যায়। ওষুধের প্রতিক্রিয়া সাধারণত এর ব্যবহার নিয়োগের কারণেই হয়ে থাকে। পরিপাকতন্ত্রের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর ভিতর খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, অস্বস্তি, অনেক সময় এমন আকার ধারণ করে যে ওষুধ বন্ধ না করে উপায় থাকে না।

রিফামপিসিন ও আইসোনিয়াজিডের এই দুটো দিয়া চিকিৎসায় অনেক সময় পান্ডুরোগের লক্ষণ দেখা যায়। যকৃৎ ভালো না থাকলে রোগী যদি যকৃতের ওপর প্রভাবধর্মী কোনো ওষুধ খেয়ে থাকে তখন রিফামপিসিনে মারাত্দক বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

আবার অনেক রোগীর প্রতিক্রিয়া হয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো জ্বর হয়। রিফামপিসিন কর্টিকোস্টেরয়েড, এন্টিকোয়াগুলেন্ট, ওরাল কট্রাসেপটিভ ও টলবিউটামাইডের কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। গর্ভবতী রোগীকে রিফামপিসিন দেওয়া ঠিক হবে না।

লেখক : বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইউনাইটেড হাসপাতাল, গুলশান, ঢাকা।

 বিএ/এসএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।