উচ্চ বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ইংরেজি শোনা ও বলার পরীক্ষা


প্রকাশিত: ০৫:১৭ এএম, ১২ মার্চ ২০১৫

দেশের মাধ্যমিক স্তরের স্কুল-মাদ্রাসায় ইংরেজি শিক্ষণ পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে। এখন থেকে গতানুগতিক পন্থায় শিক্ষকের দায়িত্ব কেবল পড়া দিয়ে তা আদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। ইংরেজিতে পাঠদানে শ্রবণ, বলা, পড়া এবং লেখা- এ চারটিতে দক্ষতা তৈরি করে দিতে হবে শিক্ষার্থীকে। এ চারটির ওপর আলাদা পরীক্ষা নিয়ে নম্বরও দিতে হবে। সম্প্রতি এক পরিপত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা জারি করেছে।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইংরেজিতে গতানুগতিক পাঠদানে সাধারণত একজন শিক্ষার্থীর লেখা এবং পড়া এই দুটি অনুশীলন হয়ে থাকে। কিন্তু বলা আর শ্রবণ বিষয়ে পরিপক্বতা দূরের কথা, ন্যূনতম দক্ষতাও তৈরি হয় না। শিক্ষার্থীরা এসএসসি পাসের পরও ইংরেজিতে তেমন দক্ষতা দেখাতে পারে না। বিষয়টি আমলে নিয়ে সরকার নতুন পাঠদান পদ্ধতি প্রবর্তন এবং তা বাধ্যতামূলক করেছে। সে অনুযায়ী এখন থেকে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীর এ দুটি বিষয়ে বিশেষ করে শ্রবণ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিবিড় যত্ন নিতে হবে। এ লক্ষ্যে দেশের প্রত্যেক স্কুল ও মাদ্রাসায় উপযুক্ত ক্লাসরুম তৈরি করা হবে।

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিগত ছয় বছরে আমরা শিক্ষার মৌলিক পরিবর্তন করেছি। তবে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য কেবল ইংরেজি নয়, গণিত-বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ে আমরা নজর দিয়েছি। কিন্তু ইংরেজির বিষয়ে এ ধরনের গুরুত্ব দেয়ার একটা তাৎপর্য রয়েছে। সেটি হচ্ছে, নানা কারণে একজন শিক্ষার্থী একটা পর্যায়ে ঝরে পড়তে পারে। তখন অনেকে কর্মজীবনে প্রবেশ করে। কেউ বিদেশ চলে যায়। স্কুলে যদি আমরা সব শিক্ষার্থীকে ইংরেজির চারটি দিকেই দক্ষতা তৈরি করে দিতে পারি, তাহলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীটিরও কর্মজীবনে তা কাজে লাগবে। এ দক্ষতার মাধ্যমে ভালো বেতনে তার চাকরি করাও সম্ভব হবে।

৩ মার্চ শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পরিপত্রে বলা হয়েছে, ক্লাসরুমে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের সঙ্গে অডিও ডিভাইস ব্যবহার করে লিসেনিং টেক্সট (শ্রবণ পাঠ) বিষয়ে পাঠদান করতে হবে। এটা এখন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে। তবে এখনই এ বিষয়ে জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি-দাখিল পরীক্ষা নেয়া হবে না। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সব পরীক্ষায় এ বিষয়ে মার্কিং (নম্বর প্রদান) করতে হবে।

শিক্ষা সচিব এ বিষয়ে বলেন, মাধ্যমিক স্তরে দশম শ্রেণী পর্যন্ত নতুন পাঠ্য বইয়ে এ বিষয়ে মোট ৩৬টি করে পাঠ রয়েছে। সনাতনী পন্থায় ইংরেজির অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মূল্যায়নে সাধারণত পড়া ও লেখার বিষয়ে মূল্যায়ন হয়। এখন থেকে আমরা ইংরেজির চার বিষয়েই মূল্যায়ন করাব। এগুলোর মধ্যে ১০ নম্বরে লিসেনিং (শ্রবণ), ১০ নম্বরে স্পিকিং (বলা), ৪০ নম্বরে রাইটিং (লেখা) এবং বাকি ৪০ নম্বরে রিডিং (পড়া) বিষয়ে মূল্যায়ন থাকবে।

জানা গেছে, এ সিদ্ধান্তের সফল বাস্তবায়ন ও পাঠদান সহজ করার লক্ষ্যে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর প্রতি ইংরেজি বইয়ের (৩৬টি) লিসেনিং পাঠের একটি করে অডিও প্রোডাকশন তৈরি করে ওয়েবসাইটে দেয়া হবে। এ প্রোডাকশন ওয়েব এবং মোবাইলে চালানোর মতো করে তৈরি হবে। এটি ক্লাসরুমে ব্যবহার করা যাবে।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্কুলের ইংরেজির শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ইংরেজি পাঠদানে লেখা, পড়া আর বলার অনুশীলন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়ে থাকে। কিন্তু লিসেনিং বিষয়ে পাঠদানটি হবে নতুন সংযোজন। এর জন্য ক্লাসরুম সমৃদ্ধ করতে হবে। তবে এ ব্যাপারেও পরিপত্রে নির্দেশনা রয়েছে। বলা হয়েছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে অডিও ডিভাইসের ব্যবস্থা থাকবে। সব স্কুল ও মাদ্রাসাকে নিজস্ব অর্থায়নে ও ব্যবস্থাপনায় শ্রেণীকক্ষে এ ডিভাইসের ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি, গভর্নিং বডি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। সূত্র : যুগান্তর

এসএইচএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।