বসন্তে শিশুর সুস্থতা


প্রকাশিত: ০৪:২৭ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

শীতের শেষে হঠাৎই বাড়তে থাকে চারপাশের তাপমাত্রা। বসন্তের শুরুর এ সময়টাতে অসুখে পড়তে দেখা যায় অনেক শিশুকেই। শিশুর সুস্থতার জন্য অভিভাবকের সচেতনতা খুব জরুরি। চলুন জেনে নিই বসন্তকালে শিশুর অসুখ এবং এর প্রতিকার-

চিকেন পক্স

ঋতু পরিবর্তনের এ সময় অনেক শিশুকেই চিকেন পক্সে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। চিকেন পক্সকে অনেকে গুটি বসন্তও বলে থাকে। চিকেন পক্স ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে অসুখ। চিকেন পক্স অসুখটি সাধারণত নিরীহ প্রকৃতির হলেও বয়স্ক এবং শিশুদের এ রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। অসুখ ছাড়াও ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে শিশুরা এ সময় চিকেন পক্সে আক্রান্ত হতে পারে। চিকেন পক্স সাধারণত ২ থেকে ৮ বছরের শিশুদেরই বেশি হতে দেখা যায়।

লক্ষণ
শিশুদের চিকেন পক্স হলে প্রথমে তা মশার কামড়ের মতো মনে হলেও পরবর্তীতে ঘামাচির মতো দেখায়। আস্তে আস্তে তা আরও বড় হতে থাকে। এক সময় তা ফুসকুড়ির মতো দেখায় এবং খুব দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বুকে এবং পিঠেই বেশি হয়ে থাকে। একইসঙ্গে শিশু দুর্বল হতে থাকে, খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়, শিশুরা প্রাণচাঞ্চল্য হারিয়ে ফেলে।

চিকিৎসা
সাধারণত চিকেন পক্সে আক্রান্ত শিশুর কোনো বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন হয় না।
চিকেন পক্স প্রতিরোধ ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে রাখুন।
চিকেন পক্স দেখা দিলে শিশুর শরীর খুব চুলকায়। শরীর চুলকালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিনামিন জাতীয় সিরাপ খাওয়াতে পারেন।

অভিভাবকের করণীয়

চিকেন পক্স হলে শিশুদের খাওয়ার রুচি কমে যায়। তাই এ সময় শিশুদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। শিশুদের এ সময় শিং মাছ, কবুতরের মাংস, তাজা শাকসবজিসহ নানা রকম পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারেন।
চিকেন পক্স হওয়ার ৫-৬ দিন পর নিমপাতা, হলুদ একসঙ্গে সব শরীরে মেখে ৫-৬ দিন গোসল করিয়ে দিন। ছোঁয়াচে রোগ বিধায় লেপ, কাঁথাসহ শিশুর ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।

জ্বর ও সর্দি-কাশি
এ সময় শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশন হয়ে জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

লক্ষণ
শিশুর গলাব্যথা, গলায় খুশ খুশি কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া,
শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, খাওয়ার অরুচিসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।

অভিভাবকের করণীয়
শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশনে সাধারণত ৪-৫ দিনে এমনিতেই সেরে উঠে। এ সময় অভিভাবকরা শিশুকে যতদূর সম্ভব বিশ্রামে রাখুন। ঘরোয়া দাওয়াই দিতে পারেন। এতে শিশুরা আরাম বোধ করবে। আদা, লেবু চা, পুদিনা পাতা, তুলসী পাতার রস, কালিজিরা ইত্যাদি এ সময় শিশুকে দ্রুত সেরে উঠতে এবং আরাম পেতে সাহায্য করবে। তবে দীর্ঘসময় শিশুরা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

অ্যালার্জি ও হাঁপানি
বসন্তে নানা বর্ণের ও গন্ধের ফুল ফোটে। এ ফুলের একটা বড় অংশের পরাগায়ন ঘটে বাতাসের মাধ্যমে। তাই বসন্তের পুষ্প রেণু অ্যালার্জি ও হাঁপানির সাধারণ ঘটনা। আর এ অ্যালার্জি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হয় শিশুরাও। এ সময় শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালি থেকেও শিশুরা অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্ত হতে পারে।

লক্ষণ
নাক দিয়ে পানি পড়ে, বুক চেপে আসা, নাক চুলকায়, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

অভিভাবকের করণীয়
শিশুরা এ সময় যাতে ধুলাবালি থেকে দূরে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বাইরে বের হলে মাস্ক, স্কার্ফ, ক্যাপ ব্যবহার করতে দিন।
ফুল নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেয়া থেকে শিশুদের বিরত রাখুন।
শিশুরা যাতে তাজা, পুষ্টিকর সবজি খায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে শ্বাসকষ্ট থেকে আরাম পেতে ইনহেলার ব্যবহার করাতে পারেন।

এইচএন/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।