উৎসবে শাড়ি


প্রকাশিত: ০৮:০৩ এএম, ০১ জুন ২০১৬

বাঙ্গালি উৎসবের সাথে শাড়ির সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। যতই আধুনিক ট্রেন্ড আসুক না কেন উৎসবে শাড়ির রয়েছে আলাদা কদর। সব বয়সী রমনীদের পছন্দের পোশাক শাড়ি। যাদিও কেউ কেউ এখন শাড়ি পরতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না তার পরেও উৎসব বলে কথা। শাড়িতে নারীদের সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহুগুণে। অনেক সময় ছোটরাও বড়দের দেখে বায়না ধরে শাড়ি পরার। সারা বছর আত্মীয়-স্বজনদের যা-ই উপহার দেন না কেন, উৎসব উপলক্ষে শাড়ি সেই জায়গাটা দখল করে রাখে।

উৎসবের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। তবে এখনকার তরুনীরা জমকালো শাড়ি পরতে খুব একটা পছন্দ করছে না। রুচিশীল মার্জিত ডিজাইনের শাড়ি পরতে বেশি পছন্দ করছে। হালকা রং থেকে শুরু করে গাঢ় রং পরছে অনেকেই। উৎসব মানেই তো নতুন সাজ পোশাক। তার সাথে মিলিয়ে গয়না পরা।

ঐতিহ্যবাহী শাড়ির কদর রয়েছে বেশ। তাঁতের শাড়ি থেকে শুরু করে জামদানি, কাতান, মসলিন, তসর, সিল্ক শাড়ি রয়েছে পছন্দের তালিকায়। এছাড়াও অনেকেই ঠিক করে রেখেছেন পরবেন এন্ডি, মটকা সহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। শাড়ির কাজের মধ্যেও রয়েছে নতুনত্ব। সুতি শাড়িও পরবেন অনেকেই। যেহেতু ঈদের মধ্যে গরম থাকবে তাই সুতি শাড়ির কদর রয়েছে।

উৎসব ও সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গনে নারীদের শাড়ি ছাড়া মানানসই লাগে না। নানান রং সমাহারে সাজিয়ে তোলা হয় উৎসবের শাড়িগুলো। রং হিসেবে উঠে আসছে লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি, সাদা, গোলাপি। এক রঙা শাড়ির সঙ্গে সেই রং এর প্রিন্ট বা সুতার কাজ এখন বেশ চলছে। আবার এক রঙা শাড়ির সঙ্গে অন্য রং কন্ট্রাস্ট করে কারে তৈরি করা হচ্ছে শাড়ি। চওড়া পারের শাড়ি এই সময়ে অনেকে পরছেন। আবার দুই তিন লেয়ারের চওড়া পার শাড়িও পরছেন অনেকে।

বাহাড়ি রং কাজ করা শাড়ি উৎসবের সাথে মানিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো। সিল্ক শাড়িতে হাতের কাজ, কাঁথা স্টিচ করা কাজ বেশ চলছে। এছাড়াও ব্লক প্রিন্ট করে তার মধ্যে হালকা সুতার কাজ করে রাঙ্গিয়ে তোলা হচ্ছে শাড়ি। এমব্রডারি করা শাড়িও নিয়ে এসেছে নতুনত্ব। তবে মসলিন শাড়ির উপরে এমব্রডারির কাজ ও তাতালের কাজ মন কাড়া। এক দেখাতেই পরতে মন চাইবে সবার। অনেকের আবার ভারী কাজ করা শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। তারা নির্দ্বিধায় পরতে পারেন কাতান শাড়ি। কাতান শাড়ির জমকালো কাজেও হয়ে উঠতে পারেন অনন্যা।

যারা খুব হালকা কাজের মধ্যে শাড়ি পরতে চান তাদের জন্য রয়েছে নানান ধরনের শাড়ি। তসরের শাড়িতে হয়ে উঠতে পারেন সবার চাইতে আলাদা। হালকা কাজের মধ্যে তসর শাড়ি বেশ জনপ্রিয় সবার। মনের মাধুরি মিশিয়ে আল্পনাও করা হয় ঈদ উপলক্ষে। নকশা হিসেবে উঠে এসেছে লতাপাতা, ফুল, বিভিন্ন ধরনের আল্পনা। নজরকাড়া এসব নকশার শাড়ি হতে পারে আপনার উৎসবের সঙ্গী।

সারাদিন শাড়ি পরতে চাইলে সকালে বেছে নিন হালকা রং শাড়ি সঙ্গে হালকা মেকাপ। এতে করে সকালের সাজে আপনাকে লাগবে স্নিগ্ধ। বিকেলে কোনো অনুষ্ঠান কিংবা বেড়াতে গেলে পরতে পারেন গাঢ় রঙের শাড়ি। সাথে করতে পারেন ভারী মেকআপ। কারণ শাড়ির সাথে সাজটা খুব জরুরি। মানানসই সাজ না হলে শাড়ি পরাটাই বৃথা হয়ে যাবে। শাড়ির সাথে পরতে পারেন মেটাল, মাটি, কাঠ, সুতার গহনা।

সবাই চায় অন্তত উৎসবের দিনে তাকে একটু আলাদা লাগুক। সেই জন্য অন্য দিন যাই পরুক না কেন এই দিনটিতে অনেকেই বেছে নেন শাড়ি। কারণ নিজের মনের মতন সাজ না হলে উৎসব ঠিক জমে ওঠেনা। সাজ-পোশাকের সঙ্গে উৎসবের একটা সংযোগ রয়েছে। আর শাড়ির সাথে রয়েছে বাঙ্গালির সংস্কৃতির সম্পর্ক। উৎসবে তাই এই সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে শাড়িকে পোশাক হিসেবে বেছে নিন।

এইচএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।