বিয়ের আগে মানসিক প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৯ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
বিয়ে জীবনের গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম

বিয়ে জীবনের গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিয়ের পর সংসারের চাপ, দায়িত্বশীলতা, সঙ্গীর প্রতি যত্নশীল হওয়ার পাশাপাশি সন্তান লালন পালনসহ একাধিক বিষয় দেখভাল করতে হয়। সব মিলিয়ে বিয়ের পরের জীবন রোমাঞ্চকর, ঠিক তেমনই হতে পারে চাপের। তাই বিয়ের আগে মানসিকভাবে নারী-পুরুষ উভয়েরই প্রস্তুত থাকা উচিত। জেনে নিন কীভাবে-

আদর্শ দম্পতির কাছ থেকে পরামর্শ নিন

আপনার আশপাশে নিশ্চয়ই এমন অনেক দম্পতি আছেন, যারা বিবাহিত জীবনে বেশ সুখী ও আদর্শ দম্পতি হিসেবে বিবেচিত! বিয়ের আগে আপনার উচিত এমন কোনো দম্পতির কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া। বিবাহিত জীবনে সুখী হওয়ার কৌশল জানার চেষ্টা করুন তাদের কাছ থেকে। তাহলে মানসিকভাবে আপনি সহজেই প্রস্তুত হতে পারবেন।

কাউন্সিলিং করুন

বিয়ে নিয়ে আপনার মনে যদি নানা ধরনের নেতিবাচক বিষয় ঘুরপাক খায়, তাহলে কাউন্সিলরের পরামর্শ নিন। আপনার মনোভাব এ ধরনের থাকলে আপনি বিবাহিত জীবনে সুখী হতে পারবেন না। তাই কাউন্সিলিং করুন, প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন বিয়ের আগে। এতে বিয়ের আগে উদ্বেগ বা ভয় কাটিয়ে উঠবেন সহজেই।

‘আমরা’ বলতে শিখুন

বিয়েতে স্বার্থপরতার কোনো স্থান নেই, তাই বিয়ের পর আপনি কোনো বিষয়ে শুধু ‘আমি’ বলতে পারবেন না। ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’ বলা শিখতে হবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি নিজের পরিচয় হারাবেন। জীবনসঙ্গীকে আপনি যেমন সম্মান ও মর্যাদা দেবেন, তার কাছ থেকেও তেমনটিই পাবেন। বিয়ের পর সংসারে শান্তি বজায় রাখতে অহংকার ও আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে দূরে থাকুন।

আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা

বিয়ের আগেই হবু দম্পতির উচিত দুজনের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলে নেওয়া। কারণ বিবাহ বিচ্ছেদের বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে আর্থিক বিষয়কে কেন্দ্র করে। তাই বিয়ের আগেই হবু জীবনসঙ্গীর সঙ্গে আপনার বেতন, ঋণ, সম্পদ, বিনিয়োগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলুন। আর সে হিসেবেই বিয়ে ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করুন। তাহলে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তু হতে পারবেন সহজেই।

সন্তানের বিষয়ে কথা বলুন

বিয়ের আগেই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন দুজনে। হয়তো সঙ্গীর ভাবনার সঙ্গে আপনারটি নাও মিলতে পারে, সেক্ষেত্রে আগ থেকেই দুজনে এ বিষয়ে পরিকল্পনা করে রাখুন। এতে করে মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া সহজ হবে।

ক্ষমা করা শিখুন

ক্ষমা একটি সফল বিবাহের অন্যতম চাবিকাঠি। সঙ্গীর ছোটখাট ভুল ক্ষমা করেই একে অপরের সঙ্গে বসবাস করতে হবে। তাই এর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকুন। না হলে পরবর্তী সময়ে একে অন্যের প্রতি ভুল বোঝাবুঝি, তিক্ততা ও দূরত্বের সৃষ্টি হবে।

খোলা মনের ও নমনীয় হন

বিবাহিত জীবনের পথ কখনো বন্ধুর হয় না। এক্ষেত্রে পারিবারিক, আর্থিকসহ নানা বিষয়ে ঝড়ঝাপটা আসতে পারে। তাই কোনো বিষয় নিয়ে বা কারও কথা শুনে আক্রমণাত্মক হবেন না। বরং খোলা মনের হন ও নমনীয় ভাব বজায় রাখুন শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে। জীবনসঙ্গী উপর যাতে বিশ্বাস ও ভরসা রাখতে পারেন এজন্য আগের থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন।

দুজনের সীমানা নিয়ে আলোচনা করুন

বিয়ের পর জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা স্বভাবিক। তবে আপনাদের সম্পর্ক যতেই ঘনিষ্ঠ হোক না কেন নিজেদের লিমিট নির্ধারণ করুন। অনেক দাম্পত্যে অশান্তি বাড়ায় সঙ্গীর চলাফেরা, কথাবর্তা, বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা।

এক্ষেত্রে আপনার হবু জীবনসঙ্গী আপনার উপর এসব বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন কি না কিংবা আপনার মতামত ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ আছে কি না তা আগের থেকেই কথা বলে জেনে নিন। তাহলে বিয়ের পরে আর সমস্যা হবে না। আবার এই বিষয় বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতেও আপনাকে সাহায্য করবে।

বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন ও হাসতে শিখুন

বিবাহিত জীবনে সুখী হকে জীবনসঙ্গীকে সেরা বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করুন। শুধু প্রেমিক বা গৃহকর্তা হিসেবেই নয়, বরং তার সঙ্গে যাতে সব বিষয় শেয়ার করতে পারেন এজন্য তাকে বন্ধু ভাবুন। সংসারে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে শিখুন।

সব বিষয়েই খুশি থাকুন, তাহলে দেখবেন সংসারে শান্তি থাকবে। সবার সংসারেই সমস্যা থাকে, যদি সব সময় আপনি সমস্যাগুলো নিয়েই ভাবেন তাহলে সুখী হতে পারবেন না। সব সমস্যার মধ্যেই হাসিমুখে থাকার মানসিক প্রস্তুতি নিন বিয়ের আগ থেকেই।

সূত্র: ওয়েডিং ওয়্যার/ব্রাইডস্টোরি

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।