প্রথম শিক্ষককে আজও ভুলিনি

মামুনূর রহমান হৃদয়
মামুনূর রহমান হৃদয় মামুনূর রহমান হৃদয় , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২৪
শিক্ষকের অবদান অস্বীকার করতে পারবে না কোনো শিক্ষার্থীই

বিশ্বজুড়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয় শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে। তবে এই একদিন শিক্ষদের প্রতি সম্মান জানানোর পশাপাশি প্রতিটি দিন এমনকি সব সময়ই শিক্ষকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত সব ছাত্র-ছাত্রীরই। শিক্ষকের অবদান অস্বীকার করতে পারবে না কোনো শিক্ষার্থীই। তাদের হাত ধরেই সফলতার সিঁড়ি আঁকড়ে ধরে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী।

আজকের দিনটি আমার কাছে বরাবরই বিশেষ। কারণ আমার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ‘কনা ম্যাম’ এখনো আমার জীবনের অন্যতম প্রিয় মানুষ। তিনি ছিলেন আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক, যিনি শুধু একজন শিক্ষকই নন, আমাদের অভিভাবকও বটে।

ফার্মগেটের তেজগাঁও কাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালযয়ে প্রথম হাতেখড়ি হয় আমার। যেদিন প্রথম স্কুলে ভর্তি হলাম, সেদিনই তাকে প্রথম দেখেছি। যদিও তখন আমার মনের মধ্যে ছিল হাজারো প্রশ্ন ও ভয়।

তবে কনা ম্যামের স্নেহময় আচরণ সেই ভয়কে ধীরে ধীরে উড়িয়ে দিয়েছিল। আমরা সবাই তাকে ভালোবেসে কনা ম্যাম ডাকতাম। তার মৃদু হাসি ও কোমল কণ্ঠস্বর আমাদের মুগ্ধ করতো। ক্লাসরুমে আমরা হয়ে উঠতাম অনেক মনোযোগী।

শুধু পড়াশোনায় নয়, খেলাধুলাতেও কনা ম্যাম সব সময় আমাদের উৎসাহিত করতেন। কখনো পড়ার জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেননি, বরং উৎসাহ দিতেন নতুন কিছু শেখার জন্য। যখন কোনো বিষয় বুঝতে পারতাম না, কনা ম্যাম ধৈর্য ধরে আমাদেরকে বোঝাতেন। তার ধৈর্য ও যত্নশীল মনোভাব আজীবন আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

প্রথমবারের মতো আমি যেদিন স্কুলের দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি, তখনও সেটি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ভয়ে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন কনা ম্যাম বুঝিয়েছিলেন, জীবনে সফল হতে হলে প্রথমে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।

তার সেই কথাগুলো এখনো আমার জীবনের অনেক বড় প্রেরণা হয়ে আছে। তিনি শুধু পড়াশোনা শেখাননি, কীভাবে একজন ভালো মানুষ হওয়া যায় সে সম্পর্কেও জ্ঞান দিয়েছেন।

বিশ্ব শিক্ষক দিবসের এই বিশেষ দিনে, আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি কনা ম্যামের অবদান। তিনি শুধু একজন শিক্ষক নন, ছিলেন জীবনের অন্যতম পথ প্রদর্শক। তার স্নেহ, যত্ন ও শিক্ষার আলো আজও আমার জীবনে পথ দেখায়।

বিশ্বের সব শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় আজকের দিনটিতে। শিক্ষকরা সত্যিই সমাজের স্থপতি। কেননা তাদের শিক্ষা, আদর্শ, স্নেহ ও নির্দেশনাই আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপে পথ দেখাতে সাহায্য করে।

ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।