‘ওয়াটার ফাস্টিং’ করলে কি সত্যিই ওজন কমে?
ওয়াটার ফাস্টিং বা সারাদিন পানি খেয়ে ওজন কমানোর প্রচেষ্টা সম্পর্কে অনেকেরই হয়তো কমবেশি ধারণা আছে। সম্প্রতি কোস্টারিকার এক ব্যক্তি অ্যাডিস মিলার দাবি করেছেন, তিনি ২১ দিনে শুধু জল খেয়ে উপবাসের মাধ্যমে ১৩ কেজি ওজন কমিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই দাবি এখন রীতিমতো ভাইরাল।
ইনস্টাগ্রামে মিলার তার ওজন কমানোর জার্নি সম্পর্কে জানিয়েছেন এক ভিডিওতে। সেখানে তিনি বলেন, ‘এ বছরের শুরুতে, আমি কোস্টারিকাতে ২১ দিনের জন্য শুধু পানি পান করে উপবাস শুরু করি। আর এই অভিজ্ঞতা সত্যিই আমার জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমি ২১ দিন পানি পান করে উপবাস করেছি। এতেই ১৩.১ কেজি (২৮ পাউন্ড) হারিয়েছি। শরীরের ৬ শতাংশ চর্বি কমেছে।’
মিলারের ওজন কমানো গল্পটি হয়তো অনেক স্থূলকায় ব্যক্তিদের উৎসাহ বাড়াতে পারে। তবে এই পদ্ধতিতে ওজন কমানোর চেষ্টা করার আগে, ওয়াটার ফাস্টিংয়ের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে সবারই জানা উচিত। না হলে আপনার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে।
View this post on Instagram
ওয়াটার ফাস্টিং কি?
ওয়াটার ফাস্টিং হলো, এমন একটি অভ্যাস যেখানে একজন ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুধু পানি পান করেন ও অন্যান্য খাবার থেকে বিরত থাকেন। প্রাচীন অনুশীলনটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুবিধা ও শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে ডিটক্সিফাইংয়েরে প্রভাবের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
ওয়াটার ফাস্টিংয়ের সময় শুধু পানি পান করা হয়। স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে এর সময়কাল ২৪ ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন বা এমনকি সপ্তাহ পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
ওয়াটার ফাস্টিং কীভাবে ওজন কমায়?
এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে শরীরে জমে থাকা টক্সিক বা বিষ ও বিপাকীয় বর্জ্য দ্রব্য সহজেই দূর হয়ে যায়। যাকে বলা হয় ডিটক্সিফিকেশন। সারাদিন পানি পান করে উপবাস করার পর শুধু নির্দিষ্ট একবার খাবার খাওয়ায় ও কম ক্যালোরি গ্রহণের কারণে দ্রুত ওজন কমতে পারে।
ফাস্টিং করলে শরীরের অনেক উপকার হয়। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত হয়, ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আসলে ফাস্টিং হোক বা ওয়াটার ফাস্টিং অটোফ্যাজিকে ট্রিগার করে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত উপাদানগুলোকে সরিয়ে দেয় ও নতুনগুলিকে পুনরুত্পাদন করে।
ওয়াটার ফাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় লক্ষ্য করুন
যথাযথ তত্ত্বাবধান ছাড়া বেশিদিন উপবাস করলে ডিহাইড্রেশন, ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা ও পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। এটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা শর্ত বা গর্ভবতী/স্তন্যপান করানো নারীদের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। এর সাধারণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও বিরক্তি। আবার হজমের সমস্যা এড়াতে ফাস্টিং পিরিওডের পর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি।
আপনি যে উপায়েই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন না কেন, তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারও ওজন কমানোর সফলতা দেখে আপনিও সে পদ্ধতি অনুসরণ করতে যাবেন না। কারণ ব্যক্তিভেদে তার শারীরিক জটিলতাও ভিন্ন হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জেআইএম