রোজার মাসে সুস্থ থাকতে হৃদরোগীরা যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৪
ছবি- হৃদরোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রোজা রাখুন

রোজা রাখার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এনসিবিআই এর গবেষণা দেখায়, রোজা ওজন কমাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইনসুলিন প্রতিরোধ ও করোনারি ধমনী রোগ প্রতিরোধ করা। তবে হার্টের রোগী যারা আছেন, তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রোজা রাখা।

আপনি যদি কোনো দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যেমন হার্ট-স্বাস্থ্য সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভোগেন তাহলে রমজানে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কারণ রোজা রাখলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য কমতে শুরু করে ও হৃদরোগীর অবস্থা খারাপ হতে পারে।

এ বিষয়ে মুম্বাইয়ের এশিয়ান হার্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডা. সন্তোষ কুমার ডোরা জানান, সাম্প্রতিক হার্ট অ্যাটাক বা হার্ট সার্জারি করা হয়েছে এমন রোগীদের রোজা না রাখাই ভালো। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের ছন্দের ব্যাধিযুক্ত রোগীদেরও রোজা রাখা উচিত নয় কারণ, তাদের ঘন ঘন ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।

রোজা রাখার ঝুঁকি এড়াতে ও রমজানে হার্টের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হৃদরোগীদের বেশ কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক, চলুন জেনে নেওয়া যাক-

আরও পড়ুন

অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না

দুটি প্রধান হরমোন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে- ঘেরলিন, যা ক্ষুধাকে উদ্দীপিত করে ও লেপটিন, যা ক্ষুধাকে দমন করে। আপনি যখন কিছুক্ষণ খান না, তখন ঘেরলিনের মাত্রা বাড়ে পায়। আর খাওয়ার পরে, লেপটিনের মাত্রা শরীরকে বলে যে এটি পূর্ণ।

তবে অত্যধিক খাওয়া এই ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। যা অত্যধিক খাওয়ার একটি চিরস্থায়ী চক্রকে ট্রিগার করে ও ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তাই প্রচুর পরিমাণে খাবার ইফতারে খাওয়া যাবে না।

ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন

কফি, চা ও কোমল পানীয়ের মতো ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করুন। কারণ এটি আয়রন শোষণকে বাধা দিতে পারে ও প্রস্রাবের প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা ডিহাইড্রেশনের অন্যতম হতে পারে। ক্যাফেইন হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপও বাড়িয়ে দিতে পারে। পেটের ফোলাভাব এড়াতে চা ও কফির বদলে পুদিনা ও আদাযুক্ত পানীয় পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বেশি করে পানি পান করুন

‘হাইপোভোলেমিয়া’ (ডিহাইড্রেশন) প্রতিরোধে রমজানে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে হৃদরোগীদের। হাইড্রেটেড থাকার জন্য কমপক্ষে 8 গ্লাস তরল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগীদের সকালের পরিবর্তে সন্ধ্যায় মূত্রবর্ধক (জলের বড়ি) খাওয়া উচিত, যাতে সঠিক হাইড্রেশন বজায় রাখা যায়।

খাবারের পরপরই পানি পান করবেন না

একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানীয় ও খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এজন্য ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত ছোট ছোট ভাগে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করুন।

শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন

রমজানে হৃদরোগীরা খুব বেশি পরিশ্রম না করে ইফতারের ১-২ ঘণ্টা আগে হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিংয়ের মতো হালকা থেকে মাঝারি ক্রিয়াকলাপ বেছে নিন। ভুল সময়ে শরীরচর্চা করলে হৃদপিণ্ডে আরও চাপ পড়ে এমনকি রোগী অজ্ঞান বা স্ট্রোক পর্যন্ত করতে পারেন।

মেটাবলিক সিনড্রোমের জন্য সতর্ক থাকুন

রমজানে ইফতারে বেশিরভাগ মানুষ ভাজা ও চিনিযুক্ত খাবার খান। এটি স্থূলতা ও ইনসুলিন প্রতিরোধকে উন্নীত করতে পারে। যা বিপাকীয় সিন্ড্রোমের জন্য দুটি প্রধান ঝুঁকির কারণ। এর থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসবের বদলে খাদ্যতালিকায় রাখুন ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য ও চর্বিহীন প্রোটিন।

পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে

কম ঘুমের ফলে রাগ, মাথাব্যথা ও ক্ষুধার কারণে চাপ বেড়ে যেতে পারে। এটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হার্টের কাজের চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করার পাশাপাশি নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত হৃদরোগীদের রোজা না রাখাই ভালো।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।