শিশুর দুধ দাঁতের যত্নে যা করবেন

মেহেদী হাসান সজীব
মেহেদী হাসান সজীব মেহেদী হাসান সজীব , ডেন্টিস্ট, ঢাকা ডেন্টাল কেয়ার, ঢাকা
প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২৩

দুধ দাঁত। দুধ দাঁতকে মিল্ক টিথ, ডেসিডুয়াস টিথ, প্রাইমারি টিথ, টেম্পোরারি টিথ, নার্সিং বোতল টিথ বা বেবি টিথ বলা হয়ে থাকে। শিশুদের ৬ থেকে ১২ মাস বয়সে দুধ দাঁত ওঠা শুরু হয়। যা ওঠা শেষ হয় আড়াই বছর বয়সে।

একটি শিশুর মোট ২০টি দুধ দাঁত হয়ে থাকে। ওপরের চোয়ালে ১০টি এবং নিচের চোয়ালে ১০টি। এই দাঁতগুলোকে চার ভাগে বিভক্ত করে ক্রমানুসারে গণনা করা হয়।

দুধ দাঁত কি পড়ে যায়?
হ্যাঁ, দুধ দাঁত পড়ে নতুন স্থায়ী দাঁত ওঠে। সাধারণত ৫-৬ বছর বয়সে বাচ্চাদের দাঁত পড়া শুরু হয়। দুধ দাঁত পড়া শেষ হয় ১১-১৪ বছর বয়সে। মূলত ক্রমানুসারে সিরিয়াল অনুযায়ী এগুলো পড়ে থাকে। এছাড়া ৫ বছর বয়স থেকে ১৪ বছর বয়সে মানুষের মুখে দুধ দাঁত ও স্থায়ী দাঁত একসঙ্গে থাকে।

আরও পড়ুন: রুট ক্যানেল করানোর পর দাঁতে ক্যাপ পরানো জরুরি কেন?

শিশুদের দাঁতের যত্নে করণীয়
১. দুধ দাঁত ওঠা শুরু হলেই দাঁত ব্রাশ ও দাঁতের যত্ন শুরু করতে হবে।

২. বাচ্চাকে ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ পান করাবেন। ২ বছরের পর থেকে গরুর দুধ পান করাবেন। এতে দাঁত, চোয়াল, হাড় ও শরীরের অন্য অংশ সুস্থ ও শক্তিশালী ভাবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে।

৩. বাচ্চাদের ফিডারে করে দুধ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়াবেন না। ফিডারে করে খাওয়ার জন্য বাচ্চাদের ‘নার্সিং বোতল সিনড্রোম’ নামে একটি রোগ হয়। যাতে সব দাঁতে ক্যারিজ হবে। পরে ব্যথা অনুভব হবে।

৪. বাচ্চা স্টিকি চকলেট বা স্টিকি মিষ্টি জাতীয় খাবার (কেক, মিষ্টি বিস্কুট, চিপস) খাওয়ার পরপরই পানি পান করাবেন। এছাড়া তুলা (কটন) বা পরিষ্কার কাপড় পানি দিয়ে ভিজিয়ে দাঁতগুলো মুছে দিতে পারেন। এতে দাঁতে ক্ষয়রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। অন্যথায় ক্ষয় বা ক্যারিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।

আরও পড়ুন: ডেন্টাল ফিলিং কেন জরুরি?

৫. ক্ষয়রোগে আক্রান্ত দুধ দাঁতের অবশ্যই চিকিৎসা করাতে হবে। দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে উঠবে, এ জন্য চিকিৎসায় অবহেলা করা যাবে না। অবহেলা করলে ডেকে আনতে পারেন ঘোর বিপদ।

৬. শিশুদের দাঁতের চিকিৎসা করা অনেক কঠিন ও কষ্টসাধ্য। তাই বাবা-মার সচেতনতাই একমাত্র উপায় দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে ও দাঁতের চিকিৎসক থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখতে।

৭. অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে দুইবার দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করাতে হবে একদম ছোট বেলা থেকেই। সকালে নাস্তার পর এবং রাতে খাবারের পর।

আরও পড়ুন: রুট ক্যানেল চিকিৎসা কী ও কেন করবেন?

৮. বাচ্চাকে খুশি করতে চকলেট বা চিপস জাতীয় খাবার না দেওয়াই উত্তম। আপনারা যেমন দেবেন না, তেমনই আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলে দিন; যাতে তারা আপনার বাচ্চাকে এসব খাবার না দেয়।

মনে রাখা প্রয়োজন, দাঁত ব্রাশের এই নিয়ম ছোট, বড় ও বৃদ্ধ সবার জন্যই প্রযোজ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ।

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।