ব্যথার ওষুধ খাওয়া যে কারণে বিপজ্জনক

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২৩

মাথাব্যথা থেকে শুরু করে শরীরের কোথাও ব্যথা হলে মুঠো মুঠো পেইন কিলার খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। এই অভ্যাসের কারণে অজান্তে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছেন আবার কেউ কেউ।

অনেকেরই ধারণা নেই যে, অতিরিক্ত পেইন কিলার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গে কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন পেইন কিলার খেলে লিভারের সমস্যা, কিডনি ফেইলিওর এমনকি গর্ভপাত পর্যন্তও হতে পারে।

আরও পড়ুন: ওজন কমাতে খাওয়ার লোভ এড়াবেন যেভাবে

ডাইক্লোফেনাক, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেনজাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার ফলে বদহজম, পেট ব্যথা, গ্যাসট্রাইটিস, রক্তপাতসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভালো। পেইন কিলার মুহূর্তেই স্বস্তি দিলে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া শরীরের জন্য হতে পারে বিপজ্জনক। জেনে নিন ব্যথানাশক ওষুধ শরীরের কী কী ক্ষতি করে-

প্যারাসিটামল লিভারের বেশি ক্ষতি করে। এ কারণে প্যারাসিটামল পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। দৈনিক ৮টি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট (৫০০ মিলিগ্রাম) খেলে লিভারের গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। তাই জ্বর-ঠান্ডা, শরীর ব্যথা যাই হোক না কেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই প্যারাসিটামল খান।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত যে ৭ রোগ থেকে সাবধান থাকবেন

আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন কিংবা ন্যাপ্রোক্সেনজাতীয় পেইনকিলার গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, জ্বালা ও অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে। এমনকি ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণের কারণে পেটে আলসারও হতে পারে। যাদের আগে থেকেই আলসার আছে, তাদের রক্তপাত হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

যারা ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ গ্রহণ করেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মোটেও ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না। তাহলে ডিপ্রেশনের ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাব।

আরও পড়ুন: জ্বর হওয়ার কতদিনের মধ্যে কোন টেস্ট করলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে?

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেনের মতো ব্যথানাশক ওষুধ খেলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এর থেকে কিডনি ফেলিওর বা ড্যামেজও হতে পারে। যারা এরই মধ্যে কিডনির রোগে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেশি।

পেইন কিলার গ্রহণের ফলে কারও কারও গর্ভপাতও হতে পারে। গর্ভাবস্থার প্রথম ২০ সপ্তাহে যদি কেউ ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করেন, তাদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে।

আরও পড়ুন: মানুষ কেন প্রতারণা করে?

গবেষণায় দেখা গেছে, পেইন কিলার ওষুধগুলো হরমোনের কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করে। তাই গর্ভাবস্থায় যে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন ও নেপ্রোক্সেনের মতো পেইন কিলার রক্ত পাতলা করে। যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করেন, তাদের ব্যথানাশক ওষুধ মএড়িয়ে চলা উচিত।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (এনএসএআইডিএস) হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। যারা এই ওষুধগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন, তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ২০-৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।

তাই সামান্য ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পেইন কিলার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ গ্রহণ করবেন না।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।