যে লক্ষণ দেখলেই কিডনি পরীক্ষা করা জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৩

কিডনির শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। শরীর থেকে বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এই অঙ্গ। কিডনির অভ্যন্তরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক ক্রিয়াকলাপ চলে।

এক্ষেত্রে কিডনিতে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তার লক্ষণও ফুটে ওঠে শরীরে। এর মধ্যে অন্যতম হরো ক্লান্তি। কিডনি ঠিকমতো কাজ না তরলে শরীরে টক্সিন বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন: হাড়ক্ষয় ও কিডনি রোগ ঠেকাবে সয়াবিন, খাবেন যেভাবে

যা শরীরের অন্যান্য জৈবিক ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এমনকি রক্তেও টক্সিনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। জেনে নিন কিডনির সমস্যা দেখা দিলে প্রাথমিক পর্যায়ে কী কী লক্ষণ শরীরে দেখা দেয়-

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া

যদিও অনিদ্রার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে এক্ষেত্রে কিডনি রোগও একটি বড় কারণ হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বা গভীর ঘুম না হওয়া কিডনি রোগের সঙ্গে অত্যন্ত জড়িত।

শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি

হঠাৎ করেই যদি ত্বকের শুষ্কতা বেড়ে যায় ও একই সঙ্গে চুলকানিও হয় তাহলে সতর্ক থাকুন। কিডনির সমস্যার কারণে এমনটি ঘটতে পারে।

যেহেতু কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে এই অঙ্গ রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে পারে না ফলে ত্বকে পড়ে ক্ষতিকর প্রভাব। টক্সিন জমে শরীরে খনিজ ও অন্যান্য পুষ্টির পরিমাণ কমিয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে ত্বক ও হাড়ের ক্ষতি করে।

আরও পড়ুন: কিডনি রোগের যে লক্ষণ ফুটে ওঠে ত্বকে

ফোলা পা

একটি অস্বাস্থ্যকর কিডনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলেঅকে সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করতে সক্ষম হয় না। ফলে বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীরে জমা হয়।

একইভাবে যখন শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম অপসারণ করা হয় না, তখন তা পা ও গোড়ালিতে জমা হয়ে ফুলে ওঠে।

পা ফুলে যাওয়ার আরও অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে ফোলা দীর্ঘসময় ধরে চলতে থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

চোখের চারপাশে ফোলাভাব

আপনি যদি চোখের চারপাশে ফোলাভাব লক্ষ্য করেন তাহলে কিডনি পরীক্ষা করুন। যদিও সোডিয়াম জমার কারণে পা ফুলে যায়, কিডনির কার্যকারিতার কারণে প্রস্রাবে প্রোটিন সরে গেলে চোখ ফুলে যায়।

আরও পড়ুন: ডায়রিয়া থেকেও হতে পারে কিডনি বিকল, যেভাবে সতর্ক থাকবেন

পেশী ব্যথা

পেশীতে অসহনীয় ব্যথা তখনই হতে পারে যখন শরীরে উচ্চ মাত্রার বর্জ্য ও অপ্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ বেড়ে যায়। পেশীর ব্যথাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

ঠিকমতো শ্বাস নিতে না পারা

যখন কিডনিতে সমস্যা হয়, তখন রোগী সঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারেন না। এরিথ্রোপয়েটিন নামক হরমোনের ঘাটতির কারণে এটি হতে পারে।

এরিথ্রোপয়েটিনের ঘাটতি সম্পর্কে, ওয়েবিএমডি’র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এই হরমোন শরীরকে লাল রক্তকণিকা তৈরি করার জন্য সংকেত দেয়। এর ঘাটতি হলে রক্তাল্পতার সৃষ্টি হয়। ফলে রোগী শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। আরেকটি কারণ হলো তরল জমা হওয়া।

আরও পড়ুন: একদিনেই হঠাৎ কিডনি বিকল হতে পারে যে কারণে

প্রস্রাবের সময়সূচি পরিবর্তন

অনেক মানুষ প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তনের ভিত্তিতে কিডনি রোগ বলে ধারণা করা হয়। যদি আপনার প্রস্রাব গত কয়েক দিনে নিয়মিত ফ্রিকোয়েন্সি থেকে বেড়ে বা কমে যায়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

কীভাবে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করবেন?

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে যে কোনো রোগ শনাক্ত করতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস (এনএইচএস) এর তথ্য মতে, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

এজন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ, ধূমপান বন্ধ করা, অ্যালকোহল সেবন পরিহার করা, নিয়মিত ব্যায়াম ও ঘন ঘন ব্যথানাশক গ্রহণ না করার মাধ্যমে আপনি বিডনির যাবতীয় সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারেন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।