হাসিই সবচেয়ে বড় ওষুধ, সারায় যেসব রোগ
বর্তমানে কর্মব্যস্ত ও একঘেয়েমি জীবন কাটিয়ে কমবেশি সবাই স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। অনেকে তো কর্মব্যস্ততায় পরিবারকেও সময় দেন না ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নেন না। আর এ কারণে একাকিত্বে ভুগছেন অনেকেই।
বর্তমানে সবাই যেন হাসতেই ভুলে গেছেন! জানলে অবাক হবেন, হাসির বদলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে জীবন কাটালে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। দুশ্চিন্তা ও একাকিত্ব কঠিন সব ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায়। আর হাসলে নানা রোগ থেকে রক্ষা মেলে।
আরও পড়ুন: প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরলে শরীরে যা ঘটে
অর্থাৎ হাসলে শরীরে খুশি হরমোন এন্ডোরফিনের মাত্রা বাড়ায়। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়ানো থেকে শুরু করে নানা রোগের ঝুঁকি কমায়।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি রক্তে স্ট্রেস হরমোন কমাতে পারে। আমাদের ‘ফিল-গুড’ রাসায়নিক (এন্ডোরফিন) বাড়ায় এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে পারে।
গবেষণা আরও বলছে, কর্মস্থানে হাসিঠাট্টা ও সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উৎপাদনশীলতায় অবদান রাখতে পারে ও কর্মক্ষেত্রের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রিয়জনকে কতক্ষণ জড়িয়ে ধরলে মিলবে সুস্থতা?
আকুমস অ্যান্ড ড্রাগস ফার্মাসিউটিক্যালসের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের ডা. জৈনের মতে, বর্তমানে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সম্পর্ককে উন্নত করতে জ্ঞানীয়-আচরণগত থেরাপির একটি কৌশল হিসেবে হাসি ও হাস্যরস ব্যবহার করা হয়েছে।
ধারণার উপর ভিত্তি করে একটি বিকল্প মন/শরীর অনুশীলনও আছে। যাকে বলা হয় ‘লাফটার ইয়োগা’, যা ক্রমাগতভাবে দেশ ও বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।
যারা ব্যক্তিগতভাবে হাসির ব্যায়াম করেন এমনকি এর পাশাপাশি যোগব্যায়াম ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করেন তারা মানসিকভাবে আরও সুস্থ থাকেন। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ ও উদ্বেগের লক্ষণগুলো কমার পাশাপাশি ঘুমের মানও উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: আপনার সঙ্গী একান্তে যে কথাগুলো শুনতে চান
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডা. জৈনের মতে, ‘হাসি স্ট্রেস হরমোন কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে এমনকি বর্জ্য ও টক্সিন দূর করতে লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে।’
মানসিক চাপ কমায়
হাসি স্ট্রেস-বাস্টিং হরমোন নিঃসরণ করে। শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় ও পেশীগুলোকে শিথিল করে। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আসলে হাসলে হৃদস্পন্দন বাড়ে একই সঙ্গে হার্টে অক্সিজেনের মাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে কার্ডিওভাস্কুলার ফাংশন উন্নত হয় ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে বলে জানান ডা. জৈন।
আরও পড়ুন: মনের মতো সঙ্গী না পেয়ে একাই ‘হানিমুনে’ তরুণী
ক্যালোরি পোড়ায়
দিনে ১০-১৫ মিনিট হাসলে ক্যালোরি বার্ন হয়। এক্ষেত্রে ওজন বাড়ার সঙ্গে যুক্ত স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে। ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে।
ডা. জৈনের মতে, ‘প্রতিদিনের রুটিনে কয়েক মিনিটের জন্য হাসি অনুশীলন করুন। এক্ষেত্রে হাসির জন্য বিভিন্ন মাধ্যম অনুসরণ করুন। যেমন- কমেডি শো দেখুন, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে হাসুন কিংবা পছন্দের কোনো কাজ উপভোগ করে স্ট্রেসের মাত্রা কমান। এতে আপনার সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে।
হাসি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে ও একটি স্বাস্থ্যকর, সুখী জীবনযাপনে সাহায্য করে। মনে রাখবেন হাসি একটি শক্তিশালী সম্পদ। তাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না থেকে হাসুন মন খুলে, তাহলে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এএসএম