গরমে ঘামাচি ও চুলকানির সমস্যা এড়াতে যা করা জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫১ এএম, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

গরমে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো ঘামাচি। আবার রোদের কারণে এ সময় ত্বকে সানট্যানও পড়ে বেশি। পাশাপাশি ত্বকের ফুসকুড়ি কিংবা চুলকানির মতো সমস্যা বাড়তেই থাকে।

গরমের কারণে ঘাড়ে, বুকে, কুচকিতে ও বগলে ফুসকুড়ি বা ঘামাচি হয়। চুলকানি ও প্রদাহের কারণে এসব স্থান লালচে হয়ে ফুলে ওঠে ও চামড়া উঠতে থাকে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার ফলে শরীরের লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে এসব ফুসকুড়ি হয়।

আরও পড়ুন: ত্বক থেকে রোদে পোড়া দাগ দূর করবেন যেভাবে

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় সংবেদনশীল ত্বকে। এ কারণে গরমে শিশুদের ত্বকেও এর প্রভাব পড়ে।

এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে অনেকেই তাৎক্ষণিক কী করবেন বুঝতে পারেন না। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক গরমে ঘামাচি-চুলকানির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু ঘরোয়া উপায়-

বারবার গোসল করুন

গরমে গোসলের বিকল্প নেই। দুই থেকে তিনবার গোসল করুন। এতে ত্বক ঠান্ডা থাকবে। গোসলের সময় খুব বেশি সুগন্ধযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না।

আরও পড়ুন: গরমে ‘ফুড পয়েজনিং’ বাড়ে কেন? সুস্থ থাকতে করণীয়

হালকা বডিওয়াশ ব্যবহার করা ভালো। এতে ত্বকে পিএইচ ব্যালান্স বজায় থাকবে। প্রতিবার গোসলের পর অন্তর্বাসসহ পোশাক বদলে ফেলুন।

ফিটিং পোশাক পরবেন না

গরমের সময় টাইট বা ফিটিং পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন। শরীরে যেন বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সেজন্য ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। টাইট পোশাক পরলেই ত্বকে সংক্রমণ দেখা দেবে।

মনে রাখবেন, ত্বকের যেসব স্থানে বেশি ঘাম হয় সেসব স্থানগুলো যাতে পরিষ্কার ও খোলামেলা থাকে। তাহলে ফুসকুড়ি উঠবে না।

আরও পড়ুন: হিট স্ট্রোক কেন হয়? সতর্ক থাকবেন যেভাবে

বরফ সেঁক নিন

গোসলের আগে প্রতিবার ত্বকের আক্রান্ত স্থানে বরফের সেঁক নিতে পারেন। এতে জ্বালা-পোড়াভাব ও চুলকানি কমবে। একটি তোয়ালের মধ্যে কিছু বরফ নিয়ে পুরো শরীরে কিছু সময়ের জন্য সেঁক নিতে পারেন।

চন্দন ব্যবহার করুন

চন্দন ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে জাদুকরী ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, চন্দন কাঠের গুঁড়ায় অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যানালজেসিক আছে। যা ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে।

পাশাপাশি আক্রান্ত স্থানের জ্বালা-পোড়াভাব কমায়। চন্দনের গুঁড়ার সঙ্গে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখ, গলাসহ আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন: এয়ারকুলার কী? ব্যবহারের নিয়ম ও দাম জানুন

বেকিং সোডা ব্যবহার করুন

বেকিং সোডা ব্যবহারে ত্বকের চুলকানি বা প্রদাহ মুহূর্তেই কমে। এটি ত্বকের সংক্রমণ রোধে দুর্দান্ত একটি ঘরোয়া প্রতিষেধক।

পানির সঙ্গে কয়েক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করুন। এভাবে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর শরীরে পরিষ্কার পানি ঢেলে গোসল সম্পন্ন করুন।

অ্যালোভেরার নির্যাস মাখুন

অ্যালোভেরার নির্যাস ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি সেপটিক উপাদান আছে। যা ত্বক ঠান্ডা করে সংক্রমণ কমায়। ত্বকের অস্বস্তি দূর করতে আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরার রস ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন: গরমে যেসব রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় ও প্রতিরোধে করণীয়

নিমপাতাও উপকারী

নিমপাতা খুব ভালো অ্যান্টিসেপটিক। নিমের তেল, নিমপাতা বাটা দু’টোই খুব ভালো কাজে দেয় চুলকানির সমস্যায়। এজন্য এক বালতি পানিতে এক মুঠো নিমপাতা ভিজিয়ে রোদে রাখুন কিছুক্ষণ। গোসলের পর এ পানি শরীরে ব্যবহার করুন।

টেলকম পাউডার ব্যবহার করুন

গরমে সবাই কমবেশি টেলকম পাউডার ব্যবহার করে থাকেন। এটিও ত্বকের জন্য উপকারী। বিশেষ করে ত্বককে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া থেকে বাঁচায় পাউডার।

অবশ্যই সুগন্ধহীন পাউডার ব্যবহার করতে হবে। বগল, কুচকি, ঘাড়, বুকে অর্থাৎ শরীরের ঢেকে রাখা স্থানগুলোতে পাউডার ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে যেসব মারাত্মক রোগের লক্ষণ

ক্যালামাইন লোশন মাখুন

ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে পারেন, যদি আপনার ত্বক অনেক সংবেদনশীল হয়ে থাকে। এ লোশনের মধ্যে জিং অক্সাইড আছে। যা ত্বকের তুলকানি ও প্রদাহ কমায়।

তুলায় করে ক্যালামাইন লোশন ত্বকের আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করলে সানট্যান থেকে শুরু করে ফুসকুড়ি, ঘামাচি, চুলকানিসহ সব সমস্যা দূর হবে। যে কোনো ওষুধের ফার্মেসি থেকে এ লোশন কিনে ব্যবহার করতে পারেন।

শরীরের তাপ রোধে যা করবেন-

>> শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকুন। শরীর ঠান্ডা রাখুন।
>> প্রচুর পানি পান করতে হবে।
>> হালকা পোশাক পরুন।
>> অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন।
>> ঠান্ডা পানি দিয়ে প্রতিবার গোসল করুন।
>> শিশুদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মেনে চলুন।

সূত্র: হেলথলাইন

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।