গরমে যেসব রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় ও প্রতিরোধে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

গরমে এখন জনজীবন অতীষ্ট। অতিরিক্ত গরমে ছোট থেকে বড় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এজন্য দুপুরের চড়া রোদ এড়ানোর পরামর্শও দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা। গরমে হিট স্ট্রোক’সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এ সময় সুস্থ থাকতে প্রচুর জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। গরমে বেশিরভাগ শারীরিক সমস্যাগুলোই পানির অভাবে সৃষ্টি হয়। তাই দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার পানি অবশ্যই খেতে হবে। আর যারা বাইরে কাজ করেন তাদের উচিত আরও বেশি পরিমাণে পানি পা করা।

আরও পড়ুন: তাপ প্রবাহে সুস্থ থাকতে স্যালাইন নাকি ডাবের পানি পান করবেন?

শরীর ঠান্ডা করতে এ সময় আইস ওয়াটার বা ঠান্ডা পানি দিয়ে বারবার শরীর ধোওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এই গরমে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রবল গরমে শরীরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। এ সমস্যা কাটানোর একমাত্র উপায় হলো গোসল। তাই সময় পেলেই গোসল করুন।

এ সময় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। এ সমস্যাটিরও মূল কারণ হলো শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া। হিট স্ট্রোকের উপসর্গ আগে থেকে বুঝতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুন: ত্বক থেকে রোদে পোড়া দাগ দূর করবেন যেভাবে

বাইরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে বা কমে গেলে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বাড়লেই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

হিট স্ট্রোক হলে শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য থাকে না। আর ঘাম হয় ঘাম না হওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। তবে হিট স্ট্রোক হলে তা থেকে মস্তিষ্ক, কিডনি, হৃদযন্ত্রে প্রভাব পড়তে পারে। এক্ষেত্রে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।

এর পাশাপাশি মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরার মতো উপসর্গও দেখা যেতে পারে। এমন সমস্যা হলে দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে রোগীকে ঠান্ডা পানিতে গোসল বা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে।

আরও পড়ুন: তীব্র রোদে বাইরে বেরোলে যে নিয়ম মেনে চলা জরুরি

প্রয়োজন ছাড়া সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাইরে না বের হওয়াই ভালো। বের হলেও সঙ্গে ছাতা বা টুপি অবশ্যই রাখুন। প্রয়োজনে দ্রুত কাজ সেরে ঠান্ডা স্থানে থাকুন।

রোদে বের হলে অনেকেরই সানবার্ন বা ত্বক পুড়ে যায়। ফলে ত্বক লাল হয়ে যায়। সঙ্গে ফুসকুড়িও দেখা যেতে পার। ‘সানবার্ন’ হলে ত্বকের আক্রান্ত জায়গাটিতে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কিছু না লাগানোই ভালো।

গরমে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। অনেকটা অংশ জুড়ে র্যাশ বের হতে পারে। একে হিট র্যাশ বলা হয়। হিট র্যাশ এড়াতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। রোদ এড়িয়ে ছায়া বা ঠান্ডা জায়গায় থাকলে এই সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।

আরও পড়ুন: গরমে যখন তখন হতে পারে হিট স্ট্রোক, জানুন লক্ষণ

শরীরে পানির ঘাটতি হলে ও খনিজ পদার্থ বেরিয়ে গেলে পেশিতে টান ধরতে পারে। আবার শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে পেটে ব্যথাও হতে পারে। একে ‘হিট ক্র্যাম্পস’ হলা হয়।

এ সমস্যা এড়াতে বেশি করে খেতে হবে, প্রয়োজনে লবণ পানি বা স্যালাইন পান করতে পারে। ছায়া বা ঠান্ডা জায়গায় থাকতে হবে।

অতিরিক্ত ঘাম হলে বমি হওয়া, মাথাব্যথা ও দুর্বলতা থাকলে ধরে নিতে হবে ‘হিট এগ্জরশন’এ আক্রান্ত হয়েছেন। এ ধরনের অসুস্থতা বোধ করলে পোশাক ঢিলে করে দিতে হবে।

আরও পড়ুন: পা ঘেমে আঙুলের ফাঁকে ঘা হলে দ্রুত যা করবেন

ঘাড়ে ও গলায় ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে,বেশি করে পানি খেতে হবে ও রোদে থাকলে দ্রুত ছায়া বা ঠান্ডা স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। তবে সমস্যা গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া গরম থেকে বাঁচতে যখন তখন যে কোনো ঠান্ডা পানীয় বা রাস্তায় বিক্রি হওয়া কাটা ফল খাবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পানীয় বা কাটা ফলে জীবাণু থাকে।

তা থেকে ডায়রিয়ামসহ হেপাটাইটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এসবের বদলে তাজা ফলের জুস, স্যালাইন, তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। অন্যদিকে ভাজাপোড়া ও মসলাদার খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।