রমজানে পেটের সমস্যা ও বমি এড়াতে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২৩

রোজায় যতই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হোক না কেন, কিছু মুখরোচক খাবার কমবেশি সবাই খেয়ে নেন। আর এ কারণে রোজায় পেটের সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

অতিরিক্ত ও ভুল খাবার খাওয়ার কারণে পেটের ফোলাভাব, পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় রমজানে। আসলে আমাদের পাকস্থলী একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত খাবার হজম করতে পারে। তার থেকে বেশি হয়ে গেলেই পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়।

আরও পড়ুন: ইফতারে পেট ঠান্ডা রাখবে চিড়ার লাচ্ছি

গাস্ট্রিক কেন হয়? মানবদেহের পাকস্থলীতে প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই লিটার হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরিত হয়। এর কাজ হচ্ছে পাকস্থলীতে খাবার পরিপাক করতে সহায়তা করা।

পাকস্থলীতে যখন এই অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়; তখন পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ আবরণ তথা মিউকাস মেমব্রেনে প্রদাহ তৈরি হয়। যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় গ্যাসট্রাইটিস বলে।

অতিরিক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খাওয়ার ফলে ও দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন: বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়া হতে পারে কঠিন যে রোগের লক্ষণ

এর ফলে সহজেই গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের সমস্যায় ভুগতে হয়। এক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, বুক জ্বালা-পোড়া, দম বন্ধ হয়ে আসা, ঢেঁকুর ওঠা, বমি বমি ভাব, পেট ফেঁপে থাকা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

ইফতারে অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, বমি, তীব্র পেটে ব্যথা, পেটের তীব্র প্রদাহ ও ডায়রিয়ার সমস্যায় অনেকে হাসপাতালেও পর্যন্ত ভর্তি হন।

এ বিষয়ে আবুধাবির বুর্জিলের জরুরি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডা. মাগদি মোহাম্মদ গণমাধ্যমে জানান, রমজানে পেটের ব্যথার সমস্যায় বেশিরভাগ মানুষই হাসপাতালে ভর্তি হন।

আরও পড়ুন: যে কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি

অনেকের পেটের খিঁচুনি কমানোর জন্য ওষুধ ও বমি বা ডায়রিয়ার পরে রিহাইড্রেট করার জন্য শিরায় তরল প্রয়োজন পড়ে।

ডা. মোহাম্মদ পরামর্শ দেন, অতিরিক্ত ভোজের মাধ্যমে উপবাস ভঙ্গ করবেন না। খেজুর ও পানি দিয়ে ধীরে ধীরে রোজা ভাঙতে হবে। ভুলেও ডুবো তেলে ভাজা বা মসলাদার খাবার খাওয়া যাবে না। এগুলো খাওয়ার কারণেই পেট খারাপ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞের মতে, দু’একটি খেজুর ও এক গ্লাস পানি দিয়ে তাদের রোজা ভাঙতে হবে। এরপর মাগরিবের নামাজের পরে মূল খাবার খেতে হবে। ১৩-১৪ ঘণ্টা উপবাসের পর হালকা খাবার খেয়ে রোজা ভাঙতে হবে, তাহলে পেটের সমস্যা হবে না।

আরও পড়ুন: রোজায় মুখে দুর্গন্ধ হয় কেন? সমাধানের উপায় জানুন

দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার কারণে পাকস্থলী ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। তাই রোজা ভাঙতে ইফতারে অল্প খাবার খেলে পাকস্থলী ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় ২-৩টি খেজুর ও এক গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস করা।

আবুধাবির এনএমসি স্পেশালিটি হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ ইন্টার্নিস্ট ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. রবি অরোরা জানান, দীর্ঘক্ষণ রোজা রাখার পর ইফতারে ভুল ও অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণে অ্যাসিডিটি, পেটে অস্বস্তি ও গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এই বিশেষজ্ঞের মতে, ১৩-১৪ ঘণ্টা রোজা রাখার পর ইফতারে অনেকেই মিষ্টিজাতীয় পানীয় বা তরল খাওয়া শুরু করেন। এর অল্প সময়ের মধ্যে খুব বেশি কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেতে শুরু করে।

আরও পড়ুন: একমাস রোজা রাখলে শরীরে যেসব পরিবর্তন ঘটে

ফলে পেটে ফোলাভাব, গ্যাসীয় প্রসারণ, গ্যাস্ট্রাইটিস, রিফ্লাক্সের লক্ষণ দেখা দেয়, এমনকি বমিও হতে পারে। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ ইফতারের পরে ঘুম ও অলসতার দিকে পরিচালিত করে।

এমনকি ইফতার বা সেহরিতে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে অনেকেরই রমজানে ওজন বেড়ে যায়।

সূত্র: দ্য ন্যাশনাল নিউজ

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।