‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ কেন হয় ও লক্ষণ কী কী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ০৬ নভেম্বর ২০২২

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (এসসিএ) এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এতে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়, ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয় ও রোগীর মৃত্যু ঘটে।

অনেকেই সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক ভেবে ভুল করেন। সময়মতো সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে না গেলে মুহূর্তেই কার্ডিয়াক ডেথ হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান এক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, হৃদরোগের কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট দায়ী।

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী?

হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা,দ শ্বাস-প্রশ্বাস ও চেতনা আকস্মিকভাবে কমে যায়। এটি হৃৎপিণ্ডে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটে। শরীরে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় হৃদযন্ত্র পাম্পিং করতে পারে না।

এক্ষেত্রে যখন হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখনই রোগী ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। এ সময় রোগী অচেতন হয়ে যান, আর তখনই যদি তার চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে তিনি বেঁচে যেতে পারেন।

তাই নিজে বাঁচতে অন্যকে বাঁচাতে সবারই জেনে রাখা উচিত হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কেন হয়, এর উপসর্গ ও চিকিৎসাই বা কী। এ বিষয়ে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর ফোর্টিস হাসপাতালের কনসালটেন্ট ইলেক্ট্রোফিজিওলজিস্ট ড. জয়প্রকাশ শেনথার জানিয়েছেন বিস্তারিত-

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ কী?

এসসিএ’র সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো অ্যারিথমিয়া। যা হৃৎপিণ্ডের বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সমস্যার কারণে অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন। হৃৎপিণ্ডের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা হৃদস্পন্দনের হার ও ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে।

হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দে কোনো বাধা অ্যারিথমিয়া হতে পারে। এছাড়া করোনারি হার্ট ডিজিজ, জন্মগত হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, ভালভুলার হার্ট ডিজিজ বা হার্ট বড় হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণেও হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বাড়ে।

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ কী?

এসসিএ’র উপসর্গগুলো আকস্মিক ও গুরুতরভাবে ঘটে তাও আবার হঠাৎ করেই। এর মধ্যে আছে- হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি, অচেতন হয়ে পড়া।

এছাড়া মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ধড়ফড় করা, ঘ্রাণ না পাওয়া ইত্যাদি। বেশিরভাগ রোগীই এসসিএ’তে আক্রান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই লক্ষণগুলো অনুভব করেন।

সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের চিকিৎসা কী?

রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রথমেই কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর), ডিফিব্রিলেটর ব্যবহার করে (যে ডিভাইসগুলি হৃৎপিণ্ডে বৈদ্যুতিক স্পন্দন বা শক পাঠিয়ে স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন পুনরুদ্ধার করে) রোগীর হৃদস্পন্দন ফেরানোর চেষ্টা করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম জীবনধারা বজায় রাখার মাধ্যমে এসসিএ’র মতো হৃদরোগের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সূত্র: এনডিটিভি

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।