ব্রেকআপে নারীর চেয়ে পুরুষরা কেন বেশি কষ্ট পায়?
একটি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া কারও জন্যই সুখকর নয়! তা হোক প্রেমের কিংবা বিয়ের। সম্পর্ক ভেঙে গেলে নারী-পুরুষ দু’জনেরই হয়তো সমান কষ্ট হয়।
তবে বিচ্ছেদে নাকি নারীর চেয়ে পুরুষরা বেশি কষ্ট পান। এমনটিই জানাচ্ছে বিভিন্ন সমীক্ষা ও গবেষণা। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক পুরুষরা কেন বেশি কষ্ট পান বিচ্ছেদে-
বিজ্ঞানীরা রেডডিটে (একটি বিশাল অনলাইন আলোচনা ফোরাম) ১ লাখ ৮৪ জনেরও বেশি মানুষের পোস্ট পর্যালোচনা করেন সম্পর্ক বিষয়ক।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রায় ৫৫ শতাংশ পুরুষ ব্যবহারকারী প্রেমের সমস্যার জন্য সাহায্য চেয়ে পোস্ট করেছেন ও নারীর সংখ্যা সেখানে ৪৫ শতাংশ।
ফলাফলে উঠে আসে এসব পোস্টের মধ্যে ‘হার্ট পেইন বা হৃদয়ের ব্যথা’ ছিল সবচেয়ে সাধারণ থিম। গবেষকদের ধারণা, রেডডিট প্ল্যাটফর্মে নাম প্রকাশ না করা পুরুষরা তাদের আবেগ প্রকাশ করতেই সেখানে মনের কথা প্রকাশ করে সাহায্য চেয়েছিলেন।
পুরুষদের মধ্যে বিচ্ছেদের কষ্ট গাঢ় হওয়ার আরও এক কারণ হলো তারা পুরোনো এক স্টেরিওটাইপ নিয়ে বসবাস করে। ‘ছেলেরা কাঁদে না বা কাঁদতে হয় না’এই প্রচলিত কথার কারণে অনেক পুরুষ তীব্র কষ্টেও চোখের পানি ফেলেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কান্নারও আছে অনেক উপকারিতা। যার মধ্যে অন্যতম হলো কান্নার মাধ্যমে মনের কষ্ট দূর হয় ও আত্মবিশ্বাসও বাড়ে।
একজন রেডডিট ব্যবহারকারী ভিন্ন এক ফোরামে প্রকাশ করেছেন, ‘ছেলেদের দুঃখ প্রকাশ করা বা বিচলিত হওয়ার কথা নয়, তাই আমরা সাধারণত এটি নিজেদের কাছেই রাখি। সব ক্ষেত্রে বন্ধুদের সঙ্গে অনেক বিষয় ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় না লোকচক্ষুর ভয়ে। সবশেষে কাউন্সিলিং বা থেরাপি নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।’
প্রেম, সম্পর্ক ও বিচ্ছেদ নিয়ে করা অনলাইনের বিভিন্ন পোস্ট যাচাই করে গবেষকরা দেখেন, হৃদয়ে ব্যথা, অনুশোচনা, ব্রেকআপ, কান্না ও হৃদয় ভাঙার মতো শব্দগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
আর এই শব্দগুলোর ব্যবহার বেশি পুরুষদের পোস্টে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, নারীরা বিচ্ছেদ নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম আলোচনা করে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই গবেষকরা জানান, নারীর তুলনায় বিচ্ছেদে বেশি কষ্ট পান পুরুষরা।
গবেষণার প্রধান লেখক শার্লট এন্টউইসল বলেন, ‘বিভিন্ন মানুষের হৃদয়ের ব্যথা সম্পর্কিত পোস্ট দেখে আমরা বিবেচনা করেছি যে নারীর চেয়ে পুরুষরাই বিচ্ছেদ যন্ত্রণায় বেশি কাতরান। এমনকি সম্পর্কটি শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতেও তারা চেষ্টা করেন।’
গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, রেডডিটে করা পোস্টে বেশিরভাগ ছেলেরা সহায়তা চেয়েছিল যখন তারা সমস্যাটিরি প্রাথমিক পর্যায়ে ছিলেন। অন্যদিকে নারীরা ঠিক সংকটাপন্ন বা তীব্র সমস্যায় পড়ে তবেই সাহায্যের জন্য অনুরোধ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া নারীরা তাদের পোস্টে ‘আমি’ বলে নিজের সমস্যার কথা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে পুরুষরা ‘আমরা’ সর্বনামটি বেশি ব্যবহার করে নিজের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন।
যেখান থেকে গবেষকরা ধারণা করেছেন, পুরুষরা বিচ্ছেদের পরও প্রাক্তনের প্রতি সম্মান রাখেন। অন্যদিকে নারীরা তখন আর প্রাক্তনকে নিয়ে ভাবতে চান না বরং নিজের জীবনে মুভ অন করাই তাদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।
সূত্র: ব্রাইট সাইড
জেএমএস/জেআইএম