৪০ বছরেও ‘তরুণী’ কেট, জানুন রহস্য
বিশ্বের শীর্ষ ১০০ প্রভাববিস্তারকারী ব্যক্তির তালিকায় ২০১২ সালে নাম ওঠে তার। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ডাচেস অব কেমব্রিজ খুব সক্রিয় জীবনধারার নেতৃত্ব দেন।
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের অন্যতম এক সদস্য হলেন কেট মিডলটন। তিন সন্তান প্রিন্স জর্জ, প্রিন্সেস শার্লট ও প্রিন্স লুইসের জননী কেট মিডলটন আজও তরুণীই রয়ে গেছেন। তবে কীভাবে কেট নিজেকে ফিট রেখেছেন?
এক প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে তার বিয়ের আগে ও সন্তানের জন্মের পরে বেশ খানিকটা ওজন বেড়ে যায় কেটের। তবে অতিরিক্ত ওজন কমাতে তিনি ডুকান ডায়েট অনুসরণ করেন। যা তার শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে।
ডুকান ডায়েট কি?
১৯৭০ সালে একজন ফরাসি জেনারেল প্র্যাকটিশনার ডা. পিয়েরে ডুকান এই ডায়েটের উদ্ভব ঘটান। তারই একজন রোগী ওজন কমাতে মাংস বা সব খাবার এড়াতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এর থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে ডা. ডুকান তার নিজ ফর্মুলায় উচ্চ-প্রোটিন, কম কার্ব ডায়েট চারটি পর্যায়ে বিভক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে তার নামেই খাদ্য ব্যবস্থার নাম হয় ডুকান ডায়েট।
ডুকান ডায়েটে চারটি ধাপ আছে। এর মধ্যে
আক্রমণ: এই পর্যায়ে ২-৫ দিন পর্যন্ত চর্বিহীন প্রোটিন ও কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুরগির মাংস, ডিম, টকদইসহ মোট ৬৮টি পছন্দের খাবার আপনি খেতে পারবেন।
ক্রুজ: এই পর্ব ১-১২ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এর মধ্যে আছে এক দিনে চর্বিহীন মাংসের বিকল্প খাওয়া ও অন্যদিকে স্টার্চবিহীন শাক-সবজি যেমন শাক ও শসা খাওয়া।
একত্রীকরণ: এই পর্যায়ের লক্ষ্য হলো ওজন ধরে রাখা। পর্যায় ১ ও ২ এ হারানো প্রতিটি পাউন্ডের জন্য ৫ দিনের জন্য, আপনি সীমাহীন চর্বিহীন প্রোটিন, শাকসবজি, কিছু কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি খেতে পারেন। এর সঙ্গে প্রতিদিন ২৫ মিনিট ব্যায়াম প্রয়োজন।
স্থিতিশীলতা: শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ একত্রীকরণ পর্যায়ে আপনাকে অবশ্যই ডুকান ডায়েট পুরোপুরিভাবে বুঝে অনুসরণ চালিয়ে যেতে হবে। নির্দিষ্ট ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ডায়েট মেনে চলতে হবে।
ডুকান ডায়েট অনুসরণ করার সুবিধা কী?
ডুকান ডায়েট দ্রুত ওজন কমাতে পারে বলে জানা যায়। এই ডায়েটের মাধ্যমে ক্যালোরি গণনা বা খাবার পরিমাপ করার কোনো ঝামেলা নেই।
উচ্চ-প্রোটিন খাবার থাকার কারণে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এমনকি এই ডায়েটের খাবারগুলো তৃপ্তিদায়ক। আবার যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন তাদের জন্যও এই ডায়েট অনেক কার্যকরী।
তবে এই ডায়েটের অসুবিধা হলো, অনেকেই সময় ও সব ধরনের খাবার যোগাড় করতে পারেন না। আবার কঠোর নিয়ম মেনে ডায়েট করাও অনেকের জন্য মুশকিল।
যেহেতু এখানে নির্দিষ্ট কিছু খাবার থাকে তাই অনেকের শরীরে পুষ্টির অভাবও হতে পারে। তবে যারা বেশি স্থূলকায় ও অতিরিক্ত ওজনে ভুগছেন তারা এর মাধ্যমে দ্রুত ওজন ঝরাতে পারেন।
ডুকান ডায়েটের বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দেওয়া হয়। যেমন-
আক্রমণ পর্যায়ে থাকে- চর্বিহীন মাংস, মুরগি, ডিম, মাছ ও ঝিনুক, সয়া, টোফু, সিটান, চর্বিহীন দুগ্ধ যেমন- কটেজ পনির, দুধ, জল, ২ টেবিল চামচ ওটস ব্রান ইত্যাদি।
ক্রুজ পর্বে থাকে- চর্বিহীন মাংস, মুরগি, ডিম, মাছ ও ঝিনুক, সয়া, টোফু, সিটান, চর্বিহীন দুগ্ধজাত খাবার যেমন -কটেজ পনির, দুধ, স্টার্চবিহীন শাকসবজি, মাশরুম ইত্যাদি।
একত্রীকরণের পর্যাযয়ে থাকে- একটি ফল যেমন- বেরি, আপেল, কমলা, নাশপাতি, পুরো শস্যের ২টি রুটি, পনির, প্রতি সপ্তাহে ১-২টি স্টার্চ, সপ্তাহে ১-২ বার মাংস, প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ ওট ব্রান।
স্থিতিশীলতা পর্যায়ে এমন কোনো খাবার নেই যা সীমাবদ্ধ নয়, তবে আপনি একত্রীকরণ পর্বের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ ওট ব্রান খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন। এর পাশাপাশি আরও সক্রিয় হতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এমএস