পা ফাটা মারাত্মক রোগের লক্ষণ নয় তো?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২১

শীতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। বিশেষ করে এ সময় পায় ফেটে যাওয়ায় অনেকেই কষ্ট পান। এমনিই শীতে কম-বেশি চামড়া ফাটে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে পা ফাটার সমস্যা এতোটাই বেড়ে যায় যে রক্তাক্তও হয়ে থাকে।

হাত-পায়ের চামড়া ফেটে রক্ত বের হওয়ার ঘটনা কিন্তু সব সময় স্বাভাবিক নয়। এমন লক্ষণ হতে পারে শারীরিক নানা সমস্যা কারণ। অনেকেরই হয়তো জানা নেই, কঠিন ব্যাধির কারণেও পা ফাটতে পারে।

এ বিষয়ে ভারতীয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্দীপন ধরের মতে, শীতে পা ফাটার সমস্যা সব সময় সাধারণ বিষয় নয়। এটি হতে পারে অন্যান্য রোগের কারণে। জেনে নিন পা ফাটা কোন কোন রোগের লক্ষণ-

হেরিডিটারি পামোপ্লান্টার কেরাটোডার্মা

এটি এক ধরনের জিনবাহিত রোগ। এক্ষেত্রে রোগীর ত্বকে মোটা স্তর পড়ে। এতোটাই পুরু হয় যে, তা স্বাভাবিক বলে গণ্য হয় না। ডা. ধরের কথায়, এক্ষেত্রে রোগীর চামড়া স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি মোটা হয়। কাঠের মতো মনে হয়।

এমন রোগীদের হাত-পা খুব বেশি ফাটে। যদিও এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নেই। চিকিৎসার জন্য ফিজিওথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়। শীতে এ সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

পা ফাটা মারাত্মক রোগের লক্ষণ নয় তো?

সোরিয়াসিস

এটি পুরোপুরি জিনবাহিত নয়। রোগটিকে বলা হয়, জেনেটিক্যালি মিডিয়েটেড ডিজিজ। এক্ষেত্রে হাত-পায়ে লাল চাকা চাকা দাগ হতে পারে। এমনকি চুলকানি ও ত্বকের চামড়া ওঠা এ রোগের লক্ষণ। এ রোগের আরও একটি উপসর্গ, হাত-পা ফেটে যাওয়া।

সোরিয়াসিসে আক্রান্তদের পা ফেটে লম্বা লম্বা ফিশার তৈরি হয়, যেখান দিয়ে রক্তও বের হতে পারে। শীতকালে এই ফাটা বেশি বাড়ে। একই সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথা ও জ্বালা বাড়তে পারে।

এই রোগের চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে করা হয়। খাওয়ার ওষুধের পাশাপাশি চিকিৎসক ফাটা জায়গায় লাগানোর জন্য অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল ক্রিম, ফুসিডিক অ্যাসিড ক্রিম দেওয়া হয়। পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভালো মানের ময়েশ্চারাইজারও এই সোরিয়াসিস নিরাময়ে কাজ করে।

অ্যাকজিমা বা অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস

সোরিয়াসিসের চেয়ে এই রোগ সারতে কম সময় লাগে। এক্ষেত্রেও পা ফাটতে পারে। ওষুধের প্রয়োগে কমে যায় এই সমস্যা। ত্বকে লাগানোর ক্রিম দু’টি ক্ষেত্রেই মূলত এক। তবে খাওয়ার ওষুধের মধ্যে অবশ্যই বিশেষ তফাত আছে।

পিটরিয়াসিস রুবরা পাইলারিস (পিআরপি)

এটিও এক ধরনের জিনবাহিত রোগ। এই রোগে আক্রান্তদের হাত-পা শেতে এলেই অত্যধিক শুষ্ক হয়ে ফাটতে শুরু করে। সোরিয়াসিসেসর মতোই পা ফেটে রক্ত বের হতে পারে। এ রোগের চিকিৎসায় খাওয়ার ওষুধ ও পায়ে লাগানোর ক্রিম দেওয়া হয়।

পা ফাটা মারাত্মক রোগের লক্ষণ নয় তো?

প্রতিরোধের উপায়

>> শীত আসতেই মোজা পরার অভ্যেস তৈরি করুন। এতে ঠান্ডা, দূষণ, ধুলাবালি সবকিছুর হাত থেকেই পা বাঁচিয়ে রাখা যায়।

>> প্রতিদিন লবণ পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন। এজন্য এক চিমটি লবণ মিশিয়ে ওই পানিতে পা আধা ঘণ্টা চুবিয়ে রাখুন। বেশ আরাম পাবেন।

>> পিউমিস স্টোন দিয়ে নিয়মিত পা স্ক্রাব করা সবার জন্যই জরুরি। এতে পায়ে ময়লা জমে না।

>> গোসলের আগে ভালো করে নারকেল তেল মাখলে ও পরে গ্লিসারিন ব্যবহারেও উপকার মিলবে।

>> যদি পা ফাটা না কমে তাহলে স্টেরয়েড ক্রিম দেন চিকিৎসকেরা। টানা এক বা দেড় মাস ওই ক্রিম লাগালে অনেকটাই উপকার পান রোগী।

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।