প্রেশার কুকারে রান্না করা খাবার কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
কর্মব্যস্ত জীবনে রান্নার সময় বাঁচাতে সবাই প্রেসার কুকার ব্যবহার করেন। বর্তমানে প্রায় সবার রান্নাঘরেই প্রেসার কুকার আছে। খাবার দ্রুত রান্না করতে প্রেসার কুকারের বিকল্প নেই! এতে খাবার দ্রুত সেদ্ধ হয়। ফলে বিভিন্ন খাবার রান্না করতে কম সময় লাগে।
তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এতে তৈরি করা খাবার আদৌ শরীরের জন্য ভালো কি না? এ বিষয়ে কী বলছে গবেষণা? আসলে প্রেসার কুকারের ভেতরে জমা বাষ্পের চাপে খাবার দ্রুত সেদ্ধ হয়। তবে এই প্রক্রিয়ার কারণে কি নষ্ট হতে পারে খাবারের পুষ্টিগুণ?
কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, প্রেসার কুকারে রান্নার কারণে খাবারের কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে কি এই পাত্রে রান্না করা ক্ষতিকর?
ভয়ের কারণ নেই, কারণ বিষয়টি ঠিক উল্টো। ১৯৯৫ সালের এক গবেষণা অনুসারে, প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। এবার জেনে নিন প্রেসার কুকারের রান্না করা খাবার খেলে শরীরে কী ঘটে-
>> প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে সেগুলো ভালোভাবে কাজ করে। প্রেসার কুকারে রান্না করা খাবার খেলে শরীরের সব দূষিত পদার্থ দূর হয়ে যায়।
>> মাংস রান্নার ক্ষেত্রে সবাই প্রেসারপ্রেশার কুকার ব্যবহার করেন! কারণ মাংস এতে দ্রুত সেদ্ধ হয়। ফলে তা হজম হয় দ্রুত। তাই প্রেসার কুকারে মাংস রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়।
>> ফুড সায়েন্স জার্নালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব খাবারে ভিটামিন সি আছে সেগুলো প্রেসার কুকারে রান্না করলে বেশি উপকৃত হবে। এতে ৯০ শতাংশ ভিটামিন সি’ই সংরক্ষিত থাকে।
অন্যদিকে কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে রান্নার করা খাবারে ভিটামিন সি মেলে ৭৮-৬৬ শতাংশ ভিটামিন সি।
>> খাবারেও কিছু ক্ষতিকর উপাদান থাকে। যেগুলোকে পুষ্টিবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্টস বলা হয়। এসব উপাদান শরীরের উপকারী পুষ্টিগুণ আহরণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেসারপ্রেশার কুকারে রান্না করা খাবারে এসব অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্টের পরিমাণ কমে যায়।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ও অরিজিনাল অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ডায়েটের জনক ডা. অ্যান্ড্রে উইল বলেছেন, প্রেসার কুকার ব্যবহার করা নিরাপদ। বরং এটি রান্নার বিভিন্ন পদ্ধতির তুলনায় খাদ্যে পুষ্টি সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
গবেষণার তথ্য অনুসারে, প্রেসার কুকারে রান্না করা খাবার শরীরের জন্য ভালো। এতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুষ্টির মাত্রা বেড়ে যায়। তাছাড়া এটি ব্যবহার করাও সাশ্রয়ী, এতে বাঁচে জ্বালানি ও সময় তো বাঁচেই।
সূত্র: সি নেট
জেএমএস/এএসএম