শিশুর ভাইরাসজনিত রোগ হলে কী করবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৯ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২১

ডা. ইসমাইল আজহারি

বর্তমানে অনেক শিশুই ভাইরাসজনিত জটিল সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই হার বেড়েই চলছে। শুধু জ্বর-সর্দি-কাশি নয়, আরও বিভিন্ন লক্ষণ আছে, যেগুলোর মাধ্যমে বোঝা যা শিশু ভাইরাসজনিত রোগে ভুগছে।

উপসর্গ- ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৩-৬ দিনের মধ্যে অল্প তাপমাত্রা থাকে। ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহকারে জ্বর আসে। কিছু ভাইরাসের ক্ষেত্রে ভিন্নতাও থাকতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গলা ব্যথা শুরু হয়। খাওয়ার রুচি কমে যায়, ক্লান্তিবোধ হয়, শরীর দুর্বল হয়।

অনেক সময় গলা ব্যথার কারণে শিশু খাবার কিংবা পানি কিছুই খেতে চায় না। তখন পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। গলা ব্যথার পাশাপাশি মুখ গহব্বরে ছোট ছোট সাদা আকৃতির ফুসকুড়ি দেখা দেয়। ঠোঁটের আশেপাশে র‌্যাশ দেখা দেয়, এগুলো বেশ ব্যথাযুক্ত ও চুলকাতে পারে।

ভাইরাসজনিত রোগে জ্বর শুরু হওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে হাত ও পায়েও র‌্যাশ দেখা দেয়। হাত, পা ও মুখকে আক্রান্ত করতে পারে। বিশেষ করে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে এরকম সমস্যা বেশি দেখা যায়।

কারণ যে কোনো সংক্রামক ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের বিভিন্ন ভাইরাসজনিত ব্যাধিতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

যেভাবে ছড়ায় ভাইরাসজনিত রোগ

ভাইরাসজনিত রোগ মূলত ফিকো-ওরাল রুট ও নাকের পানি, থুথু ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। একেক ভাইরাস একেক রুট ব্যবহার করে। ভাইরাসজনিত হাত ও পায়ের র‌্যাশসমূহের সংস্পর্শের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। তাই বলা যায়-

> আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে।
> আক্রান্ত ব্যক্তির জামা কাপড় ব্যবহার করলে।
> আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত গ্লাভস ব্যবহার করলে স্যালাইভা থাকতে পারে ও স্যালাইভাতে ভাইরাস থাকতে পারে।
> দূষিত পানিতে আক্রান্ত ব্যক্তির মলযুক্ত কাপড় পুকুরে ধুলে সেই পানিতে ভাইরাস থাকবে। আবার সেই পানি পেটে গেলে ভাইরাসজনিত রোগ হতে পারে।

ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে করণীয়

খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়া, বিশুদ্ধ পানি পান করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে চলা, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না যাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। আবার অনেকেই ছোট শিশুদের মুখে চুমু দিয়ে আদর করেন, এক্ষেত্রেও শিশুরা ভাইরাসজনিত রোগের ঝুঁকিতে থাকে।

তাই মা বাবার এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। একই সঙ্গে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা, ভিটামিন এ, ই, সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ চলবে এতে বাচ্চাদের ইমিউনিটি বাড়ে।

ভাইরাসজনিত ব্যাধির চিকিৎসা

সাধারণত যে কোনো ভাইরাসজনিত রোগ ৭-১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তাই শিশু যদি ঠিকমতো খাবার খায় তাহলে তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। 

তবে খেয়াল রাখবেন শিশু যেন পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়। আর অবশ্যই শিশুকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়াতে হবে। পানিশূন্যতা দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।

লেখক: ডা. ইসমাইল আজহারি; সিইও, সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স এন্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ। 

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।