ব্যস্ততার মাঝেও গৃহিণীরা ফিট থাকবেন যেভাবে
সংসারের ভালো-মন্দ খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের প্রতি আর যত্নবান হয়ে ওঠা হয় না গৃহিণীদের। সারাক্ষণ ব্যস্ত সময় কাটান তারা। আমরা অনেকেই মনে করি ঘরে থাকা মানুষটার হয়তো কোনো কাজই নেই! আদতে এই মানুষটা পরিবারের সবাইকে নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত থাকেন যে তিনি নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার সামান্য সময়টুকু পান না।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যে করোনা আতঙ্ক, তার থেকে রেহাই পেতে সবার আগে প্রয়োজন নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা। ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে সব বয়সী মানুষকে হতে হবে ফিট। আমাদের গৃহের কর্ত্রীরা এদিক দিয়ে পিছিয়ে পড়ছেন না তো?
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নারীদের দেহে অনেক পরিবর্তন শুরু হয়। অতিরিক্ত চিন্তা, শারীরিক পরিবর্তন থেকে বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, যার ফলে ওজন বাড়তে থাকে। এ ছাড়াও নারীদের জীবনধারার কিছু অনিয়ম তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে কয়েকটি টিপস অনুসরণ করলে ব্যস্ত গৃহিণীরাও সহজেই ফিট থাকতে পারবেন।
নিয়মিত সকালের নাস্তা গ্রহণ করুন
ঘরের অন্যান্য সদস্যদেরকে সময়মতো সকালের নাস্তা খাওয়ালেও, গৃহিণীরা নিজের দিকে খেয়াল রাখেন না। অনেকে সকালের নাস্তা না করেই কাটিয়ে দেন। যা সবচেয়ে বড় একটি ভুল এবং অনেক রোগের জন্য দায়ী। সুস্থ এবং ফিট থাকতে সকালে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি।
সকালের খাদ্য তালিকায় কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, শাক-সবজি, ডিম কিংবা ফল রাখা যেতে পারে। এ ছাড়াও সারাদিনে তৈলাক্ত খাবার, অস্বাস্থ্যকর বাসি খাবার, অতিরিক্ত চিনি, ক্যালরি, ফ্যাটযুক্ত খাবার ও পানীয় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
শারীরিক ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম আমাদের ফিট রাখতে সাহায্য করে। তাই গৃহিনীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে, প্রতিদিনকার নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের ফাঁকে ৩০ মিনিট ব্যায়ামকে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে।
তারা ব্যায়ামের জন্য খুব সহজ কিছু কৌশল হিসেবে প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, স্কোয়াট করা, সঠিক কৌশলে বসে কাজ করা ইত্যাদির মাধ্যমে সহজেই নিজের শারীরিক সুস্থতাও নিশ্চিত করতে পারেন গৃহিণীরা।
অতিরিক্ত চিন্তা পরিহার করুন
শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিকভাবেও সুস্থ থাকা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একজন পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি মানসিক চাপে থাকেন। তাই গৃহিণীদের অতিরিক্ত মানসিক চিন্তা দূর করতে প্রতিদিন নিজের জন্য কিছু সময় রাখা উচিত।
তাছাড়া ধ্যান বা মেডিটেশন করার মাধ্যমে অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমানো যায়। যা আপনাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে অনেকটাই সাহায্য করবে।
পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করুন
সারাদিন কর্মব্যস্ত সময় কাটাতে হলে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষের প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। সাধারণত গৃহিণীদের তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হয়, তাই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো উচিত। অপর্যাপ্ত ঘুম পুরো শরীরের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে, যার কারণে সারাদিন আপনি নিস্তেজ ও অলস বোধ করবেন।
দুপুরের পর ঘুমাবেন না
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করার পর বেশিরভাগ গৃহিণীরাই দুপুরের ঘুমানোর অভ্যাস আছে। এই অভ্যাসটি ত্যাগ করতে হবে। কারণ দুপুরের ভাত ঘুম অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সহায়ক।
নিজেকে উদ্দীপ্ত রাখুন
সুস্থ ও প্রাণোজ্জ্বল থাকতে সবসময় নিজেকে নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। যা জীবনকে করে তুলতে পারে আরো সাবলীল ও ইতিবাচক।
একটি স্বাস্থ্যকর এবং সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চললে একজন গৃহিণী তার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর একজন আত্মবিশ্বাসী ও পরিপূর্ণ সুস্থ গৃহিণীই পারে তার পরিবারকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে।
জেএমএস/জিকেএস