করোনাভাইরাস শিশুকে যেভাবে সংক্রমিত করে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২০

শিশুর ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণগুলো বড়দের তুলনায় কিছুটা আলাদা। তাদের মধ্যে সংক্রমণ কম গুরুতরই নয়, লক্ষণগুলোও ব্যতিক্রম হতে পারে। করোনাভাইরাসে ভ্যাকসিন পেতে আরও দেরি হতে পারে। এদিকে শিশুর বাড়ির বাইরে বের হওয়া কিংবা বিদ্যালয় খুলে গেলে সেখানে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রকাশ করেছে কিছু সাধারণ লক্ষণের কথা যা করোনায় আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়-

গবেষণা:
যুক্তরাজ্যের গবেষকদের একটি দল একটি যৌথ সমীক্ষায় করোনভাইরাসে আক্রান্ত কমপক্ষে ২০০ শিশুর আচরণ এবং লক্ষণ নিয়ে গবেষণা করেছে।

এই গ্রুপের এক তৃতীয়াংশ শিশু অ্যাসিম্পটোমেটিক, যার অর্থ তাদের ক্ষেত্রে ভাইরাল সংক্রমণের কোনো সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়নি। এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, অ্যাসিম্পটোমেটিক শিশু দীর্ঘসময় ধরে এই ভাইরাসে সংক্রমিত থাকতে পারে, এমনকী তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একইরকম সংক্রমিত থাকতে পারে। কয়েক মাস আগে বিদ্যালয় পুনরায় চালু হওয়ার পরে কোরিয়ার বাইরে করা একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণেও একই বিষয় দেখা গেছে।

শিশুরও সংক্রমণের সুপারস্ট্রেডার হিসাবে কাজ করতে পারে, যা আশেপাশের মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ক্ষমতাকে বোঝায়। তবে, শিশুদের বাকি অংশ, যাদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো দেখা যায়, তাদের রোগের লক্ষণ বড়দের মতো না-ও হতে পারে।

Sisu-3

শিশুর ক্ষেত্রে সাধারণ লক্ষণগুলো কী?
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, যে শিশুরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল তাদের ক্ষেত্রে বিশেষত তিনটি লক্ষণ দেখা যায়। আশ্চর্যের বিষয়টি হলো গলাব্যথা বা কাশি করোনাভাইরাসের সাধারণ লক্ষণ হলেও তা শিশুদের মধ্যে এতটা প্রচলিত নয়। জেনে নিন শিশুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ তিনটি লক্ষণ সম্পর্কে-

হালকা জ্বর
হালকা তাপমাত্রার জ্বর থাকা শিশুর ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের একটি সাধারণ লক্ষণ। সমীক্ষায় প্রায় ৫৪% শিশু জ্বরে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে। এটি লক্ষ করা উচিত যে, জ্বর প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণের সর্বাধিক প্রচলিত লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি, এটি ৭৫-৮০% এরও বেশি ক্ষেত্রে উপস্থিত থাকে, এটি হালকা বা গুরুতর হতে পারে।

ক্লান্তি
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা করোনায় আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে। সমীক্ষা অনুসারে, দীর্ঘকালীন ক্লান্তি ৫৫% শিশুকে বিপর্যস্ত করেছিল। এটি একটি উদ্বেগজনক চিহ্ন হতে পারে কারণ ভাইরাসজনিত কারণে ক্লান্তি দেখা দিলে তা দূর করতে আরও দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।

Sisu-3

মাথাব্যথা
মাথাব্যথা করোনাভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গ নয়। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কেবল ১৪ শতাংশকে প্রভাবিত করে। তবে বাচ্চাদের মধ্যে মাথাব্যথা সংক্রমণের সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে। গবেষণায় থাকা ৫০% এরও বেশি শিশু হালকা মাথাব্যথায় ভুগেছে।

শিশুর স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি কি চলে যেতে পারে?
গন্ধ এবং স্বাদ চলে যাওয়া সম্ভবত এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সবচেয়ে অদ্ভুত লক্ষণগুলোর একটি। এটি শিশুর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যদিও তার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে যে, শিশুদের একটি অংশ নাক বন্ধ এবং গলাব্যথা ছাড়াই গন্ধ এবং স্বাদ চলে যাওয়ার সমস্যায় ভুগেছে। অন্যান্য লক্ষণ যেমন ডায়রিয়া, শরীরের ব্যথা, ক্ষুধা হ্রাস মোটামুটি সাধারণ ছিল।

অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ
গবেষকরা বলেছেন যে উপরের তালিকাভুক্ত লক্ষণগুলো বাদে সংক্রমণের আরেকটি সম্ভাব্য লক্ষণ হলো ত্বকে ফুসকুড়ি এবং প্রদাহ। যদি কোনো শিশুর ত্বকে অস্বাভাবিক ফুসকুড়ি বা লালচে র্যাশ দেখা দেয়, তবে এটি করোনার লক্ষণ হতে পারে।

এইচএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।