ঘরের যেসব জিনিসে করোনাভাইরাস লুকিয়ে থাকতে পারে
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই মারাত্মক সংক্রমণ এড়াতে যথাযথ স্যানিটাইজেশন এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী পদক্ষেপ গ্রহণ এখন আমাদের সুরক্ষার প্রথম শর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোগের নীরব প্রকৃতি
অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রায় ৪৫ শতাংশ কেস কোনোরকম উপসর্গ ছাড়াই হতে পারে। যার ফলে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, যাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না কিন্তু আক্রান্ত হয়েছেন, তারা ১৪ দিনেরও বেশি সময় ধরে সংক্রমিত থাকতে পারে। অর্থাৎ তারা দীর্ঘ সময় ধরে অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম হতে পারে। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
আপনি ভালোভাবে পরিষ্কার করছেন?
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অথচ কোনোরকম লক্ষণ নেই, এমন যে কেউ ঘরের বিভিন্ন জিনিসে সহজেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে। যেহেতু তারা জানেই না যে, তারা আক্রান্ত। সুতরাং, আপনার পরিবারের ‘কোভিড হটস্পটস’ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি, যদি আপনি বা পরিবারের কোনো সদস্য অসুস্থ বোধ করেন বা আপনারা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে সন্দেহ হয়। যদি আপনি ঘরের আনাচে-কানাচে পর্যন্ত পরিষ্কার করে থাকবেন, তবু এটা অসম্ভব নয় যে আপনার অগোচরেই কোথাও না কোথাও জীবাণু থেকে যাচ্ছে।
এই ঘরোয়া জিনিসগুলোতে করোনাভাইরাস লুকিয়ে থাকতে পারে
এমনকি আপনি যদি দরজার হাতল, কল, সিঙ্ক এবং টেবিলের উপরসহ প্রতিদিন স্পর্শ করা হয় এমন সব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করেন, তারপরও এমন জায়গা থাকতে পারে যা আপনি মিস করে গেছেন। আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি দ্বারা পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, দেখা গেছে যে চীনে করোনা আক্রান্ত রোগীর কক্ষে ভাইরাসযুক্ত তিনটি জিনিস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের বেডশিট, বালিশ এবং খাটের বাইরের অংশ। এর চেয়েও মারাত্মক বিষয়টি হলো, কক্ষগুলো প্রতিদিন দুইবার যথাযথভাবে স্যানিটাইজড এবং জীবাণুমুক্ত করা হয়েছিল!
এই গবেষণার ফলাফল এই সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘন ঘন বেডশিট পরিবর্তন করার দিকে গুরুত্ব দেয়। বিশেষত যদি আপনি কারো সাথে সাক্ষাত করেন বা বাইরের কেউ যদি আপনার বাড়িতে রাত কাটানোর জন্য উপস্থিত থাকে।
সুতরাং, বাইরে থেকে আসার পরে জুতা বাড়ির বাইরে রাখবেন এবং কাপড় সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে নেবেন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার বিছানার চাদর ও বালিশের কভার ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন।
মনে রাখবেন, যদিও বিছানাপত্র পরিষ্কার করার ব্যাপারে কঠোর কোনো নির্দেশনা নেই তবু মহামারীর এই সময়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করলে ক্ষতির কিছু নেই। বিশেষ করে, বাড়িতে কোনো অতিথি এলে এই নিয়ম মেনে চলা উত্তম।
এইচএন/এএ/পিআর