এই ৫ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়
করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বজুড়ে। এমন পরিস্থিতে এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মরণঘাতি এই ভাইরাসের কারণে এটি আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও প্রতিদিনই আমরা এই ভাইরাস সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানতে পারছি, তবে এটি স্পষ্ট যে সব ধরনের জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সবার আগে শরীরকে প্রস্তুত করা জরুরি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো প্রতিদিনের খাবারে বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন খাবার খাওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিকর খাবারগুলোর দিকেও মনোযোগ দেয়া। সেই খাবারগুলো আমাদের শরীরের ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের আক্রমণ বন্ধ করার ক্ষমতাকে দুর্বল করে। ক্ষুধা মেটানোর জন্য আমরা অনেকসময় চিনিযুক্ত এবং প্রসেসড পণ্য খাই যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন-
অ্যালকোহল
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। যদিও এক গ্লাস অ্যালকোহল খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না, কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত মদ্যপান নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সোডা এবং অন্যান্য কার্বনেটেড পানীয়
শরীরের জন্য উপকারী কোনো পানীয় খুঁজলে সোডা এবং অন্যান্য কার্বনেটেড পানীয় এড়িয়ে চলুন। এই বেভারেজগুলো যদি শতভাগ আসল ফলের রস বলে দাবিও করে তবে জেনে রাখবেন, এগুলো আসলে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরিযুক্ত। এই জাতীয় পানীয়র সমস্যা হলো এতে ফাইবার থাকে না, তাই এগুলো পান করার পরে আপনি সত্যিই পরিপূর্ণ বোধ করেন না। এতে কেবল ক্যালোরিই থাকে না, এটি ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলত্বও বাড়াতেও সাহায্য করে। যেহেতু বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ইতিমধ্যে স্থূলত্বকে একটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছে, তাই সোডা এবং অন্যান্য মিষ্টিযুক্ত পানীয় গ্রহণে সতর্ক হোন।
কফি এবং অন্যান্য ক্যাফিনেটেড পানীয়
অনেকেই দিনটি এককাপ গরম কফি দিয়ে শুরু করতে পছন্দ করেন। যদিও এক বা দুই কাপ কফি কোনো ক্ষতি করতে পারে না, তবে সারাদিন ধরে একের পর এক কফির কাপ খালি করতে থাকলে তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সর্বনাশ ডেকে আনে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন উচ্চ মাত্রার কর্টিসল প্রকাশ করতে পারে যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া পরিবর্তন করতে পারে। দিনে অতিরিক্ত কফি পান না করে বরং রাতে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের প্রতি মনোযোগী হোন।
ক্যান্ডি এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত শর্করা
মিষ্টি কিছু খেতে মন চাইতেই পারে, বিশেষ করে মূল খাবার খাওয়া শেষে ডেজার্ট ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস অনেকের। কিন্তু সেই মিষ্টি খাবার যদি হয় অতিরিক্ত চিনিতে ঠাসা আর প্রক্রিয়াজাত তাহলে মুশকিল। বিভিন্ন স্বাদের ক্যান্ডি মূলত চিনি আর কৃত্রিম রঙে ভরা। এগুলো শরীরের ইনফ্লামেশন বা প্রদাহকে আরও বাড়িয়ে তোলে। শরীরে ইনফ্লামেশন বাড়তে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। মিষ্টি কিছু খেতে মন চাইলে আপনি মিষ্টি স্বাদের এক বাটি তাজা ফল খেতে পারেন।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, উইংস ফ্রাই এবং সমস্ত ভাজা খাবার
এই খাবারগুলো এতটাই লোভনীয় যে এর থেকে লোভ সামলে রাখা দায়। কিন্তু যতই সুস্বাদু হোক না কেন আসলে তা শরীরের জন্য ঝামেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। এগুলোতে প্রচুর লবণ থাকে যা তরল ধারণ এবং উচ্চ রক্তচাপের দিকে পরিচালিত করতে পারে, উভয়ই প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। সব রকম ভাজা খাবারে থাকে উচ্চ স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং গ্রিজ। যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ধ্বংস করে দেয়। এটিরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এই খাবারগুলো ডায়াবেটিস এবং কার্ডিওভাসকুলার অবস্থার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।
এইচএন/জেআইএম