করোনা এড়াতে বয়স্করা যেসব খাবার খাবেন
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। এদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে, তার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। বয়স্কদের কীভাবে সামলে রাখা যাবে তা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই গাইডলাইন দিয়েছে। ডায়েট-প্ল্যানে কয়েকটি খাবার রাখলে সুস্থ থাকবেন বয়স্করা।
সুস্থ শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেলস, ফাইবার। যেসব খাবারে এসব গুণ রয়েছে সেগুলো নিয়মিত খেলে তা শরীরকে চাঙ্গা করে। ভেতর থেকে মজবুত ও রোগ প্রতিরোধী করে তোলে। দেখে নিন বাড়ির বয়স্কদের এখন কোন ধরনের খাবার দেবেন-
আপেল: আপেলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপেলের মধ্যে রয়েছে বি কমপ্লেক্স ভিটামিন। এই ভিটামিনের কাজ হলো শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা সৃষ্টি করা। শরীরের নার্ভের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এই ভিটামিন। রয়েছে ডায়েটরি ফাইবার। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এর কাজ। এর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম। এ ছাড়া প্রচুর মিনারেল বা পানি। অর্থাৎ প্রতিদিন একটা করে আপেল খাওয়ার অর্থ আপনার শরীরে পানির ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ।
বাদাম: পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে দেখতে গেলে বাদামের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, ফাইবার, সেলেনিয়াম,ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। হৃদরোগ ও স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
সবুজ শাক-সবজি: সবুজ শাক-পাতায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ই, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি -অক্সিডেন্ট সহ অনেক উপাদান। মূলত শাক-সবজির বেশি খাওয়া সুস্বাস্থ্যের প্রতীক হিসেবে মানা হয়।
টক দই: এতে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক।
গাজর: শীতকালীন সবজি হলেও, গাজর প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণে আধিক্যতার কারণে গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। কাঁচা ও রান্না দু’ভাবেই খাওয়া যায় গাজর, তাই গাজরকে সবজি এবং ফল দুটাই বলা যায়।
বিনস: বিনস হলো কম ফ্যাট এবং কোলেস্টেরলমুক্ত খাবার, যার মধ্যে ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতন মিনারেল এবং ফাইবার ও প্রোটিন পর্যাপ্ত থাকে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ৩/৪ কাপ বিনস রাখা আবশ্যক। এতে কোলেস্টেরলমুক্তও হওয়া যায়।
ওটস: ওটসে প্রচুর ফাইবার এবং অ্যাভিন্যানথ্রামাইড থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারি। অ্যাভিন্যানথ্রামাইড ধমনিতে প্রদাহ কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ওটস রান্না করা সহজ, আর তা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। স্মুদি, মিল্কশেক, এমনকী কেক ও কুকি তৈরিতে ব্যবহার করা যায় ওটস। ওটসের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো ওজন কমানো। যাদের বয়স ৫০-এর বেশি, তাদের প্রতিদিনের খাবারে ৩ গ্রাম ওটস থাকলে ভালো হয়।
ডার্ক চকোলেট: চকোলেট শুধু রসনার তৃপ্তি আনে তাই না, ডার্ক চকোলেটের আছে নানা উপকারিতা। ডার্ক চকোলেটের অনেক গুণ আছে। গবেষণায় দেখা যায় চিনি ছাড়া ডার্ক চকোলেট ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। চকোলেটের ফ্লেভানয়েড দেহে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপন্ন করে যা শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এইচএন/এমএস