এই সময়ে মেদ ঝরাতে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১৫ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২০

শরীরচর্চার প্রতি আলস্য অনেকেরই। তার উপর এখন লক ডাউনের কারণে আলস্য যেন আরও জেঁকে বসেছে। বেড়েছে সারাদিন শুয়ে-বসে থাকার পরিমাণও। বাড়িতে বিভিন্ন খাবার বানিয়ে খাবার কারণে ডায়েট মেনেও চলছেন না বেশিরভাগই। এমন অবস্থা মেদ যে বাড়তে থাকবে তা নিশ্চয়ই বলে দিতে হয় না। কিন্তু এভাবে মেদ বাড়তে থাকলে তা আপনার জন্যই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেজন্য করতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম

ব্যায়াম বলতে কেউ হয়তো নিয়মিত একটু জোরকদমে হাঁটছেন ছাদে বা ট্রেডমিলে, কেউ যোগাসন করেন। কিন্তু তাতে পুরো কাজ হয় না। ঠিক কী কী করলে শরীরের প্রয়োজনীয় ওয়ার্কআউট হয় তা জেনে নিন-

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ‘আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিন’ থেকে জানানো হয়েছে, ১৮-৬৪ বছর বয়স্ক সুস্থ ও ফিট মানুষের সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি গতিতে বা ৭৫ মিনিট জোর গতিতে অ্যারোবিক ব্যায়াম করা দরকার। এর সঙ্গে নিয়মিত শরীরের নমনীয়তা বাড়ানোর ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ দিন করতে হবে পেশীর শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম।

med

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ বলতে হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো. স্কিপিং, সাঁতার কাটা ইত্যাদি বোঝায়। তিন্তু এই লকডাউনে তা করবেন কী ভাবে! তাই ছাদে হাঁটুন, স্পট জগিং করুন, স্পট স্কিপিং করুন বা স্ট্যাটিক সাইকেল চালান।

সাধ্য মতো জোরে হাঁটলে হার্ট ও ফুসফুসের বেশি উপকার হয়। টানা ২০-৩০ মিনিট। টানা না পারলে সকালে ২০ মিনিট ও বিকেলে ২০ মিনিট হাঁটবেন। এমন গতিতে যাতে হাঁপিয়ে হলেও দু’-চারটে কথা বলা যায়, কিন্তু গান গাওয়া যায় না। তবে তার আগে হাঁটু-কোমর-গোড়ালির অবস্থা দেখে নেবেন। হার্ট-ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যারোবিক করুন। তবে হাঁটা বা জগিংয়ের আগে ভালো হাঁটার জুতো পরে নেবেন। না হলে পায়ে ব্যথা হবে।

স্ট্রেচিং কী ভাবে করতে হয় তা কমবেশি সবাই জানেন। বিশেষ কিছু নয়, শরীরের প্রতিটি পেশীসন্ধিকে সচল রাখার হালকা ব্যায়াম। পা-কোমর-শিরদাঁড়ার স্ট্রেচিং এই সময় খুব কাজে আসবে। কোনো ব্যথা-বেদনা বা অস্থিসন্ধি ও পেশীর বড় কোনো সমস্যা না থাকলে করতেই পারেন।

med

পেশী জোরদার করার ব্যায়ামও দরকার। এটা দু’ভাবে করা যায়, ওজন নিয়ে ও শরীরের ওজনকে ব্যবহার করে। যাকে বডি ওয়েট ট্রেনিং। এর মধ্যে বিভিন্ন রকম স্কোয়াট যেমন আছে, তেমনই রয়েছে লেগ রাইজিং, প্ল্যাঙ্ক, পুশ আপ ইত্যাদি। তবে বয়স্ক বা ক্রনিক অসুখ আছে বা ফিটনেস কম বা হাঁটু-কোমর ব্যাথা আছে এমন মানুষের পক্ষে অভ্যাস না থাকলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে ফোনে কথা না বলে করা উচিত নয়। সুস্থরা অবশ্যই করতে পারেন এর সবক’টি ব্যায়াম।

ইদানীং কয়েকটি নতুন ধরনের ব্যায়ামের ধারা চালু হয়েছে যাতে সুরের তালে তালে অ্যারোবিক্সের সঙ্গে স্ট্রেচিং, ব্যালেন্সিং, স্ট্রেংথ ট্রেনিং, সব হয়ে যায়। সে রকমই একটি হল টাবাটা। বয়স কম হলে, ফিটনেস থাকলে টাবাটা করা যেতই পারে।

জুম্বা করতে পারেন। তবে বয়স কম ও ফিটনেস বেশি থাকলে তবেই। বেশি বয়সেও ফিটনেস ভালো থাকলে, হাঁটু-কোমর ঠিক থাকলে করতে পারেন।

med

যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, এই সময় তা ছেড়ে দেবেন না। এতে আপনার শরীর যেমন ভাল থাকবে, মনও হালকা হবে একটু।

এসবের পাশাপাশি বেশির ভাগ সময় সচল থাকার চেষ্টা করুন। এক জায়গায় টানা বসে থাকার অভ্যাস হলে ব্যায়ামের ফল সেভাবে পাবেন না।

শুধু মেদ ঝরানো নয়, ব্যায়ামের সুফল আছে আরও। যেমন- হার্ট ও ফুসফুসকে তাজা রাখে। কোভিড-১৯-এর জটিলতা ঠেকাতে যার বড় ভূমিকা আছে। সুগার-প্রেশার-কোলেস্টেরল কম রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে প্রথম দু’টির সঙ্গে যে কোভিডের সম্পর্ক আছে, তা এখন সবাই জানেন। হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হাড় নরম হয়ে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে। ফিটনেস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কোভিড-১৯ ঠেকাতে ও হলে তার সঙ্গে যুঝতে যা এখন একান্ত দরকার।

আনন্দবাজার/এইচএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।