করোনা থেকে বাঁচতে কী খাবেন, কী খাবেন না
বাইরে বের হওয়া যাবে না বলে একবারে অনেক জিনিসপত্র কিনে ঘরে তো ঢুকলেন, তার ভেতরে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য কতটুকু? করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সবরকম সচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষ্মণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যেকোনো ভাইরাস হলো প্রোটিন যুক্ত অণুজীব, যার কারণে মানুষ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এমনকি মারাত্মক নিউমোনিয়ায় (নতুনভাবে) আক্রান্ত হতে পারে। তাছাড়া এই ভাইরাস ভয়ংকর প্রাণঘাতী রোগ তৈরি করতে পারে খুব সহজে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।
অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হলো কিছু ভিটামিন, খনিজ ও উৎসেচক, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের (দেহের কোষ, প্রোটিন ও DNA ক্ষতি করে এমন কিছু) বিরুদ্ধে লড়াই করে, শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে শরীরে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। প্রধান অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো হলো বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই, লাইকোপেন, লুটেইন সেলেনিয়াম ইত্যাদি।
* করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যে খাবারগুলো বেশি করে খেতে হবে, সেগুলো হলো:
* বিটা ক্যারোটিন: উজ্জ্বল রংয়ের ফল, সবজি। যেমন গাজর, পালংশাক, আম, ডাল ইত্যাদি।
* ভিটামিন এ: গাজর, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, ডিম, দুধজাতীয় খাবার।
* ভিটামিন ই: কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, বাদাম তেল, ভেজিটেবল অয়েল, যেকোনো আচার, সবুজ শাক-সবজি ইত্যাদি।
* ভিটামিন সি: আমলকী, লেবু, কমলা, কাঁচা মরিচ, করলা।
এছাড়া যে খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেগুলোর একটি তালিকা দেয়া হলো। এ খাবারগুলো আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে তো বাড়িয়ে তুলবেই, সেইসঙ্গে বিভিন্নভাবে আপনার শরীরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে:
* সবজি, নানারকম শাক ছাড়াও কমলা, পেঁপে, আঙুর, আম, তরমুজ ইত্যাদি। এছাড়াও মশলার মধ্যে আদা, রসুন, হলুদ, দারচিনি গোলমরিচ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন।
* ওটস, ফাইবারযুক্ত আটা, বাড়িতে বসানো টক দই, গ্রিন টি, চিনি ছাড়া লিকার চায়ে এল-থেনিন এবং ইজিসিজি নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনেক যৌগ তৈরি করে শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
* দুধ, ডিম, মুরগির মাংস খাদ্য তালিকায় থাকুক। অবশ্যই খুব ভালো করে রান্না করে ফুটিয়ে খাবেন। হাফ বয়েলড বা পোচ একদম নয়। মাংসও যেন সুসিদ্ধ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। উচ্চতাপমাত্রা পরিবহনে সক্ষম এমন পাত্রে রান্না করুন।
যেসব খাবার বাদ দেবেন:
* সব ধরনের কার্বোনেটেড ড্রিংকস, বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, তামাক, সাদাপাতা, খয়ের ইত্যাদি। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বাধা দিয়ে ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়, ঠান্ডা খাবার, আইসক্রিম, চিনি ও চিনির তৈরি খাবার (যা ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করে)।
এইচএন/জেআইএম