ফল খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি?

হাবীবাহ্ নাসরীন
হাবীবাহ্ নাসরীন হাবীবাহ্ নাসরীন , কবি ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ০৬ জুলাই ২০১৯

স্বাস্থ্যের প্রায় সবরকম সমস্যার সমাধান মিলতে পারে ফল খেলে। হোক তা ত্বক ভালো রাখা কিংবা কোষ্ঠকাঠিণ্যের মতো কঠিন সমস্যা! ফল থেকে মেলে অসংখ্য স্বাস্থ্যোপকারিতা কারণ এতে অধিক পরিমাণ পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি ইত্যাদি থাকে।

ফল আমাদের শরীরে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করে এবংক্রনিক রোগগুলোর ঝুঁকি কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ফল খায়, তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মক্ষমতা বেশি। এর মানে হলো ফল আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মনোযোগের সময় বৃদ্ধি করে।

Fol-1.jpg

রাতের খাবারের পরপরই একবাটি আম নিয়ে বসেন? এমনটা অবশ্য অনেকেই করে থাকেন। কিংবা মাঝরাত অবধি জেগে থেকে ক্ষুধা পেলে আপেলে কামড় বসানোর অভ্যাসও থাকে অনেকের। নাস্তা হিসেবে ফলের চেয়ে কম ঝামেলার খাবার আর কী আছে! কিন্তু এসব অভ্যাস কি সত্যিই ভালো?

ফল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়

সকালে খালিপেটে একগ্লাস পানি ও ফল খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। কারণ সকালে আমাদের বিপাকপ্রক্রিয়া উচ্চতর থাকে। এই সময়ে আমাদের পাচকপ্রক্রিয়া দ্রুত শর্করা ভেঙে দেয় যা আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো দ্রুত মিশে যেতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যোগান দেয় যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ, ফ্রি র্যাডিক্যাল, প্রদাহ ইত্যাদি থেকে বাঁচায়। তাইতো ফলকে শক্তির ‘পাওয়ার হাউজ’ও বলা হয়। আপনি যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তবে ব্যায়াম শুরুর আগে ও পরে ফল খেয়ে নেয়া উত্তম। বিশেষ করে কলা কিংবা আমের মতো ফলগুলো। কারণ এগুলো আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয় এবং ইলেক্ট্রোলাইট হিসাবে কাজ করে।

Fol-1.jpg

কখন ফল এড়িয়ে চলবেন?

রাতে কিংবা ঘুমের ঠিক আগে ফল খেলে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে এবং ঘুমে ব্যাঘ্যাত ঘটাতে পারে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল খাবার এবং ফল খাওয়ার মাঝখানে অন্তত ত্রিশ মিনিটের ব্যবধান রাখতে। খাওয়ার ঠিক আগে কিংবা পরপরই ফল খেলে তা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ ফলে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে এবং ফাইবার হজম করার জন্য সময়ের দরকার পড়ে।

Fol-1.jpg

মূল খাবারের সঙ্গে ফল খেলে তা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ এতে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ফল এবং খাবারের মধ্যে অন্তত দুই ঘন্টার একটি ফাঁকা রাখা দরকার। এছাড়া, আঙুর এবং কমলার মতো সাইট্রাস ফলগুলো সকালে খালিপেটে এবং খাওয়ার পরপর এড়িয়ে যাওয়া উচিত। কারণ এই ফলগুলো খালিপেটে খেলে তা পেটে এসিডের সৃষ্টি করতে পারে।

southeast

কেমন ফল খাবেন?

সর্বোচ্চ পুষ্টি পেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই তাজা ফল খেতে হবে। ফল আস্ত না খেয়ে জুস করে খেলে ভিটামিন এবং ফাইবারের পরিমাণ কমে যাবে। যা আমাদের শরীরের জন্য কম উপকারী। তাই চিকিৎসকেরা জুসের বদলে আস্ত ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ফাইবার আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কারণ এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। এটি ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন কমাতে সাহায্য করে। সব ঋতুতেই কিছু না কিছু ফল পাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো হয় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সেসব ফল রাখতে পারলে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।

এইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।