সঙ্গীর হাত ধরলে কী হয়?
প্রিয়জনের হাত ধরে একটি জীবন পাড়ি দেয়ার জন্য বিয়ের বন্ধনে বাঁধা পড়ে দুটি হৃদয়। আমৃত্যু হাত ধরে থাকাতেই লুকিয়ে আছে সুখের নানা উপাদান। এতেই লুকিয়ে আছে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি- এমনটাই দাবি চিকিৎসাবিজ্ঞানের।
প্রিয় মানুষটির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম উপায় হলো স্পর্শ। হাতে হাত রাখা, তালুবন্দি করে ফেলা সঙ্গীর তালু- আর এতেই নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে হৃদরোগ, ব্যথা বেদনা, ব্যস্ত জীবনের স্ট্রেস। লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে এমন তথ্য। কয়েক হাজার দম্পতির মধ্যে একটি পরীক্ষা চালান তারা। তাতে দেখা যায়, ভালোবাসা বোঝাতে হাতে হাত রাখেন এমন দম্পতির প্রায় ৭৫ শতাংশই সঙ্গীর চাহিদা ও অব্যক্ত কথা প্রায়শই বুঝে যান। বাকি ২৫ শতাংশ অল্প ইঙ্গিতেই বোঝেন সঙ্গীর মনের কথা।
শুধু মানসিক বোঝাপড়াই নয়, লাভ হরমোন অক্সিটোসিন ক্ষরণে সাহায্য করে হাতের উপর হাত রাখার অভ্যাস। এই উষ্ণতাতেই যৌন জীবন, একে অন্যের সহমর্মী ও বিশ্বাসী হয়ে ওঠার ঝোঁক বাড়ে।
সম্পর্কে বিশ্বাস, ভালোবাসা ও সহমর্মিতা এলে যে মানসিক চাপ দূর হবে সহজেই। সারাদিনের কাজের চাপ, ক্লান্তি-বিরক্তি এ সবই সরিয়ে দিতে পারেন শুধু এক ছোঁয়ায়। নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার আর এক অসাধারণ উপায়।
শুধু মনের চাপই নয়, শরীরে ব্যথা-বেদনার দাওয়াইও যে ভালোবেসে হাত ধরার মধ্যে লুকিয়ে তা বিভিন্ন গবেষণায় দাবি করেছেন কলোরাডো বোল্ডার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। তাদের দাবি এতে যে ফিল গুড হরমোন ক্ষরিত হয়, মরফিনের মতো বেদনানাশক ওষুধের চেয়েও তা শক্তিশালী।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে দিনের অন্তত পাঁচ-দশ মিনিট সঙ্গীর হাত ধরে বসে থাকেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে ব্যথা-বেদনায় ভোগার সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ৬৫ শতাংশ।
হাতে হাত রাখার অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তচাপ। হার্টের অসুখকেও দূরে রাখে। বিশেষ করে অত্যধিক চাপ ও রাতজাগার অভ্যাস থাকলে এই দাওয়াই কিছুটা ক্ষতিপূরণ করে হার্টের।
মানসিক চাপ কমাতে এই উপায় তুলনাহীন। হাতে হাত রাখার মাধ্যমে সঙ্গীর প্রতি যে উষ্ণতার বার্তা যায়, তাতে সে বেঁচে থাকার বাড়তি টান ও বিপদকে মোকাবিলা করার মানসিক শক্তি পায়।
মনোবিদদের দাবি, ভালোবাসা বজায় রেখে হাতে হাত রাখার উপকারিতা অসীম। আর এই কাজের জন্য কোনো কারণও লাগে না। বরং নিজেদের মধ্যের সুসম্পর্ক ও বোঝাপড়াই যথেষ্ট। এমনকি সাময়িক অশান্তি বা ঝগড়ার পর এই অভ্যাস ভেঙে দিতে পারে অনেক অভিমানও।
আনন্দবাজার/এইচএন/এমএস