জিরাপানি খেলে কী হয়?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২৮ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জিরাপানি দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আমাদের দেশে। অনেকে শখের বশে জিরাপানি খেলেও এটি আসলে খুবই উপকারী একটি পানীয়। জিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজ, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল এবং নানা সব উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে।

প্রতিদিন জিরাপানি খেলে ত্বকে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে স্কিনের ভেতরে উপস্থিত টক্সিক উপদানসমূহ বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে ত্বকের বয়স তো কমেই, সেইসঙ্গে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পড়ার মতো।

নিয়মিত জিরাপানি খেলে শরীরে ডায়াজেস্টিভ এনাজাইমের উৎপাদন বেড়ে যায়, সেইসঙ্গে লিভারে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরাও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।

Jira-2

জিরায় উপস্থিত বেশ কিছু উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করে বুকে মিউকাসের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা কমায়, সেই সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে নানাবিধ রেসপিরেটরি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। আর এমনটা হওয়া মানে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল প্রতিদিনের সঙ্গী। এমন অবস্থা যদি আপনারও হয়ে থাকে, তাহলে আজ থেকেই এক গ্লাস পানিতে পরিমাণমতো জিরা ভিজিয়ে সেই পানি পান করা শুরু করুন, দেখবেন কব্জি ডুবিয়ে খেলেও এবার থেকে আর গ্যাস্ট্রিক হবে না। জিরার শরীরে উপস্থিত একাদিক উপাকারী উপাদান একদিকে যেমন হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়, তেমনি হজমে সহায়ক এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদ-হজম হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

জিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে দেয়। ফলে খাবার এত সুন্দরভাবে হজম হতে শুরু করে যে ওজন বাড়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আর কম খাবার খাওয়া মানে ওজনও কমে যাওয়া।

নিয়মিত জিরাপানি পান করলে শরীরে পানির ঘাটতি দূর হয়। সেইসঙ্গে শরীরে তাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে শরীর শুকিয়ে গিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। শরীরকে ডিহাইড্রেট করার পাশাপাশি আরও একটি কাজ করে থাকে জিরা, তা হলো মশলাটি খাওয়ামাত্র শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক হতে শুরু করে। ফলে শরীরে লিকুইড ব্যালেন্স ঠিক থাকে।

Jira-3

ক্লান্তি কাটাতে ঝটপট এক গ্লাস জিরা ভেজানো পানি খেয়ে নেবেন। দেখবেন শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। কারণ জিরায় থাকা একাদিক উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এনার্জি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ক্লান্তি দূরে পালায়।

নিয়মিত সকালবেলা খালি পেটে জিরা ভেজানো পানি খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। এই কারণেই তো ডায়াবেটিস রোগীদের জিরা ভেজানো পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করে জিরা পানি খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স যেমন ঠিক হয়ে যায়, তেমনি পটাশিয়ামের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার কমতে শুরু করে। পটাশিয়াম, শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখার মাধ্যমে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে থাকে।

এইচএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।