পাঁচ ভুল অভ্যাসে বাড়ছে আপনার পিঠের ব্যথা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহটি ব্যাক কেয়ার অ্যাওয়ারনেস উইক বা পিঠের যত্ন সচেতনতা সপ্তাহ হিসেবে পালন করা হয়। ছবি/প্রতীকী

আমরা অনেক সময় না জেনেই এমন কিছু কাজ করি, যা ধীরে ধীরে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে থাকে। এটা যেমন অনেক সময় না জানার কারণে হতে পারে, আবার দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণেও হয়। এমনই একটি সমস্যা হলো—পিঠের ব্যথা।

প্রতিদিনের জীবনে না ভেবে আমরা এমন অনেক কাজই করি, যা ধীরে ধীরে আমাদের মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে ও দীর্ঘমেয়াদে ব্যাকপেইন বা পিঠের ব্যথায় কাহিল করে তোলে। তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি।

যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহটি ব্যাক কেয়ার অ্যাওয়ারনেস উইক বা পিঠের যত্ন সচেতনতা সপ্তাহ হিসেবে পালন করা হয়। এই উপলক্ষে চলুন জেনে নিন এমন পাঁচটি অভ্যাসের কথা, যা নিঃশব্দে আপনার পিঠের ও মেরুদণ্ডের ক্ষতি করছে।

১. ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অফিসকেন্দ্রিক জীবনধারা এখন পিঠের ব্যথার অন্যতম বড় কারণ। দীর্ঘসময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে মেরুদণ্ডের ডিস্কে চাপ পড়ে। এতে কোমর ও নিচের পিঠে ব্যথা শুরু হয়। তাই প্রতি ৩০–৪৫ মিনিট পর চেয়ার থেকে উঠে সামান্য হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করলে ব্যথার ঝুঁকি অনেকটাই কমে।

২. ভুলভাবে বসা বা দাঁড়ানো

কুঁজো হয়ে বসা, ঘাড় ঝুঁকিয়ে মোবাইল দেখা বা একদিকে ভর দিয়ে দাঁড়ানো — এসব ছোট ভুলে মেরুদণ্ডের গঠন বিকৃত হতে পারে। হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং–এর তথ্যমতে, ভুল ভঙ্গিতে বসে থাকলে পেশিতে টান পড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে মেরুদণ্ড বেঁকে যেতে পারে।

৩. ভারী ব্যাগ এক কাঁধে বহন করা

এক কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে অভ্যস্ত অনেকেই অজান্তে মেরুদণ্ডে অসম চাপ সৃষ্টি করেন। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস জানায়, ভারসাম্যহীন ওজন বহনের কারণে কাঁধ ও ঘাড়ের মাংসপেশি টানটান হয়ে যায়, যা পরবর্তীতে ক্রনিক ব্যাক পেইনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পাঁচ ভুল অভ্যাসে বাড়ছে আপনার পিঠের ব্যথা

৪. অতিরিক্ত নরম গদিতে বা ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো

নরম বিছানায় ঘুমালে শরীর নিচের দিকে ঢলে পড়ে, ফলে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয়। ঘুমের সময় সবচেয়ে ভালো ভঙ্গি হলো পাশ ফিরে শোয়া বা সোজা হয়ে গলার নিচে ছোট বালিশ রাখা। আমেরিকান স্পাইনাল হেলথ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সঠিক গদি পিঠের ব্যথা প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর একটি।

৫. ব্যায়ামের অভাব ও ওজন বেড়ে যাওয়া

শরীরচর্চা না করলে কোমর ও পিঠের আশপাশের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়, ফলে মেরুদণ্ডকে আর যথেষ্ট সাপোর্ট দিতে পারে না। ওজন বেড়ে গেলে সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা যোগব্যায়াম করলে পিঠ শক্ত ও নমনীয় থাকে।

মেরুদণ্ড আমাদের শরীরের ভারসাম্যের মূল ভিত্তি। তাই এটি যত্নে রাখা মানে পুরো শরীরের যত্ন নেওয়া। ছোট ছোট অভ্যাসে পরিবর্তন আনলেই পিঠের ব্যথা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

তথ্যসূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং, আমেরিকান স্পাইনাল হেলথ অ্যাসোসিয়েশন, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, দ্য ল্যানসেট

এএমপি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।