ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে বাঁচাবে শোবার ঘরের যে ৫টি অভ্যাস

আপনার কি সকালে ঘুম ভাঙে হাঁচির মিছিল দিয়ে? অফিসের পুরনো ফাইল দেখলেই চোখে পানি আসে? রোদ-বৃষ্টি সবসময় ধুলো আপনার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে? এসবই ধুলো বা ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ।
ডাস্ট অ্যালার্জি প্রকৃতপক্ষে কোনো মৌসুমি সমস্যা নয়; এটি একটি অনন্তযুদ্ধ যা চলতে থাকে গ্রীষ্মের তপ্ত বাতাসে, বর্ষার আর্দ্রতায়, শরতের শুষ্কতায় এবং শীতের আবদ্ধ ঘরে। তবে আপনার প্রতিদিনের জীবনের কিছু অভ্যাস এ ক্ষেত্রে আপনার ব্যাপক উপকার করতে পারে। জেনে নিন এমন পাঁচটি উপায়-
১. আপনার বিছানার নিচে, কার্পেটের গভীরে, পর্দার ভাঁজে বাস করে লক্ষ লক্ষ আণুবীক্ষণিক প্রাণী, এরা ডাস্ট মাইট নামে পরিচিত। এরা আপনার ত্বকের মৃত কোষ খেয়ে বেঁচে থাকে এবং তাদের মল ও দেহাবশেষ বাতাসে মিশে আপনার শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে। ফলাফল? নাক দিয়ে পানি, চোখ চুলকানো, শ্বাসকষ্ট এবং অবিরাম হাঁচি। শোবার ঘরে কার্পেট ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন। ব্যবহার করতে চাইলে একটি ভ্যাকিউম ক্লিনার কিনে নিন, নিয়মিত কার্পেট ও পর্দা পরিষ্কার করুন।
২. প্রতি সপ্তাহে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কাঁথা ইত্যাদি ধুয়ে ফেলুন। বাতাসের অতি মিহি ধুলো আপনার বিছানায় জমা হয় প্রতিদিন। তাই ঝাটা দিয়ে বিছানা ঝাড়লে বড় বড় ময়লা গেলেও মিহি ধুলোগুলো থেকে যায়, আবার তোশকের ধুলো ঝাড়ার ফলে উপরে উঠে এসে চাদরে জমাও হয়। তাই প্রতি ৭ দিনে, প্রয়োজনে আরও আগেই বিছানার চাদর পাল্টে ফেলুন। সেই সঙ্গে তোশক বা ম্যাট্রেসের জন্য পৃথক কভার ব্যবহার করা ভালো, যা প্রতি মাসে একবার অন্তত ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘরে হালকা পর্দা ব্যবহার করুন। বাসায় একাধিক সেট পর্দা রাখুন যেন মাসে একবার করে পাল্টাতে পারেন। পর্দার বদলে হালকা ব্লাইন্ডস বা রোলার স্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন।
২. শোবার ঘরে বা পুরো বাসাতেই ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করলে বাড়ির বাতাস অ্যালার্জেনমুক্ত থাকবে। সপ্তাহে দুইবার বিশেষ ডাস্ট মাইট অ্যাটাচমেন্টসহ ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করুন। ঘরের আর্দ্রতা ৫০% এর নিচে রাখার চেষ্টা করুন।
৩. ঘরের সিলিং ফ্যান এসি নিয়মিত পরিষ্কার করুন। এসব জায়গায় জমে থাকা ধুলো পুরোনো হলে আপনার ডাস্ট অ্যালার্জি বাড়বে। ঘরের অন্যান্য আসবাবপত্র পরিষ্কার রাখুন। পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
৪. কিছু কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট ঘরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ করে। এমন কিছু প্রাকৃতিক সমাধানও খুঁজে নিতে পারেন। যেমন, স্নেক প্ল্যান্ট, তুলসী ও অ্যালোভেরা।
৫. সারাদিন বাইরে কাজ করে শরীরে ও চুলে নানান ধরনের ধুলো পড়ে, যা শুধু হাতমুখ ধুলে পুরোপুরি যায়না। তাই ঠান্ডা লাগার বা টনসিলের সমস্যা না থাকলে গ্রীষ্মকালে রাতে ঘুমানোর আগে একটি সংক্ষিপ্ত গোসল আপনাকে অনেকটাই ভালো বোধ করাবে।
ডাস্ট অ্যালার্জি সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায় না, কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আপনি এটিকে আপনার দৈনন্দিন জীবনে একটি ছোট ফুটনোটে পরিণত করতে পারেন। তাই বাড়ির বাইরে, বিশেষ করে রাস্তায় মাস্ক ব্যবহার করুন ও দৈনন্দিন জীবনে শুরু করুন এমন কিছু চর্চা যা আপনার অ্যালার্জিকে নিয়স্ত্রণ করবে।
এএমপি/এএসএম