ঈদ কেনাকাটা
‘সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মার্কেটে এসেছি’

‘রোজা প্রায় শেষের দিকে, এখনো বেতন-বোনাস কিছুই পাইনি। ঈদের আগে বেতন পাবো কি-না তার ঠিক নেই। তবে এসব কথাতো আর বাচ্চারা বুঝবে না। ওরা ছোট, এখন ওদের আনন্দের বয়স। তাই ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু টাকা ধার করেই কেনাকাটা করতে এসেছি। নিজেদের জন্য কিছু কেনা সম্ভব না। ওদের খুশিতেই আমাদের ঈদ।’ এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন শামীম নামের এক পোশাক শ্রমিক বাবা।
এই চিত্র শুধু শামীমের নয়, অনেক পরিবারের গল্প এটা। বেতন পায়নি এমন শ্রমিকের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। এমনকি অনেক মালিকরা বেতন না দিয়েই গার্মেন্টস বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য রোজা রেখে বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন অনেক শ্রমিক।
এমনই অনেক আবেগঘন গল্প রয়েছে আমাদের সমাজে। যাদের নিত্যদিনের লড়াই এটা। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করেন একটু ভালো থাকার। তাইতো ধনী-গরিব সবাই তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে উঠবেন ঈদ আনন্দে।
এরই মধ্যে যারা সুযোগ পেয়েছেন তারা কেনাকাটা করেছেন। যারা বাকি আছেন তারাও এখন কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এমনই চিত্র।
- আরও পড়ুন:
জমজমাট রাজধানীর শপিংমল-খোলা মার্কেট
সাধ্যের মধ্যে ঈদ কেনাকাটা
কেউ খুশি, কারোর কপালে চিন্তার ভাঁজ
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার বড়দের চেয়ে ছোটদের পোশাক তুলনামূলক বেশি বিক্রি হয়েছে। বড়রা ঈদে কিছু না নিলেও চেষ্টা করেন সন্তানের জন্য ভালো কিছু কেনার। সন্তানদের শখ পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন বাবা-মা। তাই এবার বেশি ভিড় বাচ্চাদের পোশাকের দোকানে।
যাদের সামর্থ্য আছে তারা ভিড় করছেন শপিংমলে ও বড় বড় ব্যান্ডের শপে। আর যাদের রোজকার কম তারা ভিড় করছেন ছোট ছোট মার্কেট ও ফুটপাতের ভাসমান দোকানগুলোতে। যে যার সাধ্য মতো চেষ্টা করছেন পরিবার-পরিজনকে খুশি করার।
বাবা-মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছেন ছোট্ট সোনামণিরা। তারা যেটা পছন্দ করছেন সেটা কিনে দেওয়ার সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন অভিভাবকরা। কেউ কেউ আবার পোশাকের সাথে মিলিয়ে জুতা কিনে দিচ্ছেন আদরের সন্তানকে।
মিরপুর-১০ নম্বরের ফুটপাতে দোকান দিয়ে বসেছেন আনোয়ার নামের এক বিক্রেতা। তিনি বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এখন বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। রোজার শুরু থেকেই এবার ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন তা অনেক বেড়েছে। এই শেষ সময়ে বেশি ভিড় করছেন গার্মেন্টসের কর্মীরা। কাজ শেষে সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করতে আসছেন অনেকেই। সন্তানদের আবদার পূরণ করার যথা সাধ্য চেষ্টা করছেন তারা।
জেএস/জেআইএম