জমকালো নাকি সাদামাটা, কেমন পোশাক পরবেন ঈদে

ঈদের দিন সকালেই নতুন জামাটা ঘেমে-নেয়ে গেলে কার না রাগ হবে! তাই এবারের ঈদে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে নতুন পোশাক কিনতে ভুলবেন না। শুধু গরমই নয়, আরও বেশ কিছু বিষয় খেয়াল করা প্রয়োজন। জেনে নিন এবারের ঈদে কী ধরনের পোশাক পরলে আপনি স্বস্তিতে স্টাইলিশ থাকতে পারেন।
আবহাওয়ার কথা মাথায় রাখুন
বৈশাখ মাস শুরু না হলেও রোদের তেজ কিন্তু এখন থেকেই সাবধান হওয়ার মতো। এদিকে ভোজনরসিক বাঙালির ঈদের দিনের অনেকটা সময় দিতে হয় রান্নাঘরে আগুনের পাশে। গরমের সঙ্গে সেখানে আগুন থেকে নিরাপদ থাকার কথাও ভাবতে হয়। ফলে তাপ থেকে বাঁচতে হালকা এবং আরামদায়ক কাপড় বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সুতি, লিনেন ও তাঁতের কাপড় এই সময়ের জন্য আদর্শ। এগুলো ঘাম শোষণ করে এবং শরীরে বাতাস চলাচল করতে দেয়, যা গরমে আপনাকে স্বস্তি দেবে।
অন্যদিকে এমন ঈদের সকালের জন্য এমন কাপড় নির্বাচন করবেন যেগুলো পরে নিরাপদে চুলার পাশে যাওয়া যায়। সিল্ক, মসলিন ও জর্জেটজাতীয় কাপড় এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে সহজেই অনেক দূর থেকে আগুন লেগে যেতে পারে।
স্টাইলিশ থাকতে যেমন পোশাক কিনবেন
১. নারীর শখের ঈদ পোশাক
শাড়ি: হালকা রঙের সুতি শাড়ি যেমন টাঙ্গাইল, ব্লক প্রিন্ট বা বাটিক শাড়ি হতে পারে ঈদের সকালে আপনার প্রথম পছন্দ। বিকেলে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পাতলা জর্জেট বা সাটিনের শাড়িও গরমে আরামদায়ক এবং ট্রেন্ডি। ডিজাইনে রাখুন মিনিমালিস্টিক এমব্রয়ডারি বা জরির কাজ, যা ঈদের আমেজ ধরে রাখবে।
সালোয়ার-কামিজ: কম কাজের হালকা রঙের সালোয়ার-কামিজ গরমে পরতে বেশ আরামদায়ক। এমব্রয়ডারি বা প্রিন্টেড কামিজের সঙ্গে ম্যাচিং ওড়না নিতে পারেন। ঢিলেঢালা ডিজাইনের কামিজ গরমে বেশি স্বস্তি দেবে। অনেক নারীই এ ঈদে পাকিস্তানি স্টাইলের কুর্তি পছন্দ করেন।
২. পুরুষরা যা পরবেন
পাঞ্জাবি: ঈদের নামাজে একটা ভাঁজভাঙা পাঞ্জাবি না পরলে কি ঈদ জমে! তবে জমকালো পাঞ্জাবি কিনলে ঈদগাহ্ থেকে ফেরার আগেই অস্থির হয়ে পড়তে পারেন। তাই সুতি বা লিনেনের পাঞ্জাবি গরমে পরার জন্য আদর্শ। হালকা রঙ যেমন সাদা, হালকা নীল, বেজ বা পেস্টেল শেড বেছে নিন। আবার এমব্রয়ডারি বা প্রিন্টেড ডিজাইনের পাঞ্জাবিও ঈদের দিন আপনাকে স্মার্ট লুক দিতে পারে।
শার্ট, ফতুয়া, টি-শার্ট: ঈদের নামাজ তো হলো, এবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো আর আত্মীয়দের বাসায় যাওয়ার পালা। কিন্তু অনেকেই এ সময় সকালের পোশাকটা পাল্টাতে চান। বাসায় বিশ্রাম ও আশেপাশে ঘুরতে যাওয়ার জন্য হাফ স্লিভ সুতি শার্ট এবং হালকা ফতুয়া হতে পারে আপনার স্বস্তির উপায়। লিনেনের শার্টও গরমে বেশ আরামদায়ক। সুতি বা মসলিনের ফতুয়া গরমে পরলে অস্বস্তি হবে না। এক্ষেত্রে হালকা রঙ এবং মিনিমাল ডিজাইনের ফতুয়া বেছে নিতে পারেন।
গরমের দিনে হালকা রঙের পোশাক পরাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। সাদা, হালকা নীল, পেস্টেল পিংক, মিন্ট গ্রিন, বেজ বা হালকা হলুদ রঙের পোশাক গরমে আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল। এছাড়া ঘামের দাগ যেন স্পষ্ট না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। গাঢ় রঙের পোশাক গরমে অস্বস্তি বাড়াতে পারে, তাই সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
ঈদে সারাদিন ঘোরাঘুরি এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটানোর মধ্য দিয়ে আনন্দে দিন চলে যায়। তবে নিজে স্বস্তিতে না থাকলে এই আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন না। তাই পোশাক নির্বাচনের সময় কমফোর্টকে প্রাধান্য দিন। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ঈদুল ফিতর হলো আনন্দ এবং উৎসবের দিন। এই দিনে আপনার পোশাক যেন হয় স্বস্তিদায়ক এবং ফ্যাশনেবল। তবে মনে রাখবেন, ঈদের দিন আপনার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের সঙ্গে মিলনের আনন্দটাই আসল, পোশাক হলো তারই একটি অংশ।
এএমপি/এএসএম