বইগুলো শো-পিস হয়ে যাচ্ছে না তো

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৪৩ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

স্কুল থেকে ফিরে আলস্য ভরা দুপুরে পছন্দের গল্পের বইটি নিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ার স্মৃতি আজও অনেকগুলো প্রজন্মকে নস্টালজিক করে দেয়। সেই দুপুরগুলো, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, বছর বছর বইমেলা দেখার উত্তেজনা- আজকের জীবনে এসবের রূপ বদলে গেছে। সেই শিশুরা আজ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আর আগেরমতো নেই, কাগজ থেকে বই আমাদের মোবাইল-কম্পিউটারের পর্দায় চলে এসেছে অনেকাংশেই। প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের সদস্যরা তাই বই পড়ার অভ্যাসকে নতুন করে আবিষ্কার করছে। তবে অক্ষর বইয়ের পাতায় থাকুক আর মোবাইলের স্ক্রিনে থাকুক, ব্যক্তিত্ব গঠন আর জ্ঞানের চর্চায় পড়ার কোন বিকল্প আজও নেই।

বিজ্ঞাপন

মানুষ স্বেচ্ছায় যা পড়ে, তা-ই তার জীবনকে রূপ দেয়। প্রমথ চৌধুরী তার ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বলেছিলেন- আমি লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিই এই কারণে যে, এ স্থলে লোকে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হবার সুযোগ পায়; প্রতিটি লোক তার স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজের মনকে নিজের চেষ্টায় আত্মার রাজ্যে জ্ঞানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

তাই স্বেচ্ছায় জ্ঞান উপভোগ করাকে আমরা বাঙালিরা উৎসবের রূপে আমাদের সংস্কৃতির অংশ করে নিয়েছি। ফেব্রুয়ারি মাসের অমর একুশে বইমেলা থেকে শুরু করে সারাবছর দেশব্যাপী অসংখ্য বইমেলা হয় বাংলাদেশে। যে মানুষটির বই পড়ার অভ্যাস নেই, তিনিও একবার ঘুরতে যান বইমেলাতে। কারণ, বইমেলা মূলত আমাদের জীবনযাপনের একটি অংশ।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বইগুলো শো-পিস হয়ে যাচ্ছে না তো

কিন্তু বর্তমানে এ কথা প্রায়ই শোনা যায় যে জাতি হিসেবে আমাদের পড়ার অভ্যাস গায়েব হয়ে যাচ্ছে। ভিজ্যুয়ালের জগতে মনোযোগের স্থায়ীত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। এবং একথা আসলে সত্য। বই যেন ধীরে ধীরে শো-পিসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে, যাকে রাখা হয় ঘরের শোভাবর্ধনের জন্য। অথচ কাগজের বই হোক, আর পিডিএফ হোক, সাহিত্যচর্চা যে মানবসভ্যতার জন্য কতটা জরুরি তা ভুললে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে।

কারণ বই পড়া মানে শুধু কাগজের পাতায় ছাপা অক্ষর দেখা নয়। বই পড়া মানে নতুন এক জগতে পা রাখা। বইয়ের পাতায় পাতায় লুকিয়ে থাকে নতুন চিন্তা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, নতুন আবেগ। পড়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের চিন্তার সীমানাকে বাড়িয়ে দিই। বই আমাদের শেখায় সহানুভূতি, শেখায় ভিন্নভাবে ভাবতে। বই পড়া শুধু জ্ঞান বাড়ায় না, এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেও ভালো রাখে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের চিন্তাকে গুছিয়ে নিতে পারি, মানসিক চাপ কমাতে পারি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিচিত্র ধাঁচের বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবনের রং বদলে দিতে পারি। বই আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখায়, নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের চিন্তার জগৎ প্রসারিত করি। এটি আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করে।

তাই বই পড়া মানে শুধু সময় কাটানো নয়, বই পড়া মানে নিজেকে খুঁজে পাওয়া।

এএমপি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।