জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদার আপিল শুনানি চলছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
ফাইল ছবি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিল আবেদন ওপর দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি চলছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি চলছে।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদদ্রুদ্দোজা বাদল ও আইনজীবী কায়সার কামাল, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম সজল ও মো.মাকসুদ উল্লাহ। ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। দুদকের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়েছেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে এবং সাজা ১০ বছর বাড়িয়ে হাইকোর্ট রায় দেন ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ খালেদা জিয়া পৃথক দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দেন। পাশাপাশি সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা পৃথক আপিল শুনানির জন্য ওঠে।

হাইকোর্টের রায়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শুনানিতে আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো সেটেলার খালেদা জিয়া নন। তিনি কোনো দায়িত্বেও ছিলেন না। ট্রাস্টের সম্পত্তিতে তার কোনো হস্তক্ষেপ ও সই নেই। রাজনৈতিক হয়রানির জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে নির্বাচন (২০১৮ সাল) থেকে বিরত রাখতে ওই রায় অস্ত্র (টুল) হিসেবে কাজ করেছে। যে অর্থের কথা বলা হয়েছে, তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে। এই অর্থের কোনো তসরুপও হয়নি। হাইকোর্টের রায় অনুমাননির্ভর। ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে ধারণার ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না।

এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ রায় দেন।

রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন। অন্যদিকে, খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোর জন্য দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল দেন। তিনটি আপিল ও রুলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট একসঙ্গে রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করা হয়। দুদকের রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুল যথাযথ ঘোষণা করে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও কাজী সালিমুল হক কামালের আপিল খারিজ করেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে গত বছর আপিল করেন শরফুদ্দিন আহমেদ, যেটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে।

এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।