জাতিসংঘের প্লাস্টিক দূষণরোধ সংক্রান্ত আলোচনা ব্যর্থ
প্লাস্টিক দূষণ রোধে কোনো সমাধান হয়নি। ১০০টিরও বেশি দেশ প্লাস্টিক উৎপাদনে সীমা আরোপের পক্ষে থাকলেও তেল উৎপাদনকারী কিছু দেশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেই স্থির থাকতে চেয়েছে। ফলে চুক্তি নিয়ে আলোচনায় কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এখন আইএনসি ৫.২ এর দিকে দৃষ্টি রাখছে, একটি উচ্চাভিলাষী এবং বাধ্যতামূলক প্লাস্টিক চুক্তি তৈরির সঙ্গে গঠনমূলকভাবে জড়িত হওয়ার জন্য এবং এটি সম্পাদনা শেষ করার জন্য। বর্তমানে হতাশা নিয়ে ফেরত আসলেও, প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালু থাকবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পক্ষে পলিসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর বারীশ চৌধুরীর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্লাস্টিক দূষণ (প্লাস্টিকের প্রতিটি জীবনচক্রে) বন্ধের উদ্দেশ্যে বুসানে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের প্লাস্টিক চুক্তির আলোচনায় অপর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়েছে। তবুও, ৮৫টিরও বেশি দেশ, গ্লোবাল সাউথে প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস, ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ এবং একটি নতুন আর্থিক ব্যবস্থা মেনে নিতে তাদের সমর্থন দিয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি এবং প্লাস্টিক শিল্পের ব্লকাররা, প্লাস্টিক থেকে মুক্ত হওয়ার এই আন্দোলনকে আর বেশিদিন দাবিয়ে রাখতে পারবে না। কারণ সারাবিশ্বের মানুষ এই সিস্টেম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে চলছে। যারা বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে চলা এই প্রচেষ্টাকে বন্ধ করার চেষ্টা করছে, তারা মানবস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ক্ষতির জন্য দায়ী।
সুশীল সমাজ, আদিবাসী, বর্জ্য বাছাইকারীরা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কয়েকদিন ধরে এই আলোচনায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে, ২২০ জন জীবাশ্ম জ্বালানি এবং রাসায়নিক শিল্পের লবিস্ট আইএনসি-৫-এ অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন, যা যেকোনো প্লাস্টিক চুক্তির অধিবেশনে সর্বোচ্চ।
চুক্তির প্রক্রিয়াটি করপোরেট শক্তির আক্রমণের মুখে রয়েছে এবং দেশগুলোর মধ্যেও একটি ছোট সংখ্যক দেশ এই চুক্তিকে অবরুদ্ধ, দুর্বল এবং বিলম্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বর্তমানে চেয়ারের নন-পেপার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, যা আইএনসি-৫ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে ভবিষ্যতের আলোচনার ভিত্তি হিসেবে অনুমোদিত হয়েছিল। আমরা একটি উচ্চাভিলাষী প্লাস্টিক চুক্তির তৈরির জন্য একটি গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া দাবি করছি।
আইএনসি-৫ প্লাস্টিকের ওপর একটি যুগান্তকারী এবং আন্তর্জাতিকভাবে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তিতে পরিণত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে প্রক্রিয়াটি কয়েকটি স্বল্প-দূষণকারী দেশের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ এই চুক্তিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, বিশেষত নিম্নধারার দেশগুলোর জন্য বিবেচনা করে পণ্যের নকশা তৈরি করতে। বাংলাদেশ বলতেই পারে যে তারা ইতিহাসের সঠিক দিকে ছিল। আমাদের এখনও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, কারণ প্লাস্টিকের এই সমস্যা আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতি করেই চলেছে।
এফএইচ/এমআরএম/এমএস