জুলাই-আগস্ট গণহত্যা
সাবেক ১০ মন্ত্রী-সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, সাবেক ১০ মন্ত্রী, এক সেনা কর্মকর্তা ও সাবেক এক সচিবকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১৮ নভেম্বর তাদের হাজির করতে বলা হয়েছে।
তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী; সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, দীপু মনি, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনাইদ আহমেদ পলক, কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
- আরও পড়ুন
- জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের প্রক্রিয়া শুরু
- গণহত্যাসহ জুলাই-আগস্টের সব অপরাধের বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে
- শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের পরোয়ানা আইজিপির কাছে: চিফ প্রসিকিউটর
রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম তাদের গ্রেফতার ও ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে আবেদন করেন। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন এই আদালত। তাদের বিষয়ে আগামী ২০ নভেম্বর অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলেছেন আদালত।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক বিচারপতি, পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাসহ ২০ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তিনি বলেন, পৃথক তিনটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন আদালত। গ্রেফতার ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর, ৬ জনকে ২০ নভেম্বর এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা আসামিদের ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের এই ট্রাইব্যুনালে তিনটি আবেদনপত্র উপস্থাপন করেছি। তার একটি ছিল আগে যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল এবং এর বাইরেও যারা এই মামলার অভিযুক্ত, এ রকম বেশ কয়েকজন ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের শোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য দুটি আবেদন করেছি আলাদাভাবে। সেই আবেদনে মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে তাদের এ মামলায় গ্রেফতারি দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন এবং তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
একটি আবেদনে ১৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তারা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ড. দীপু মনি, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।’ এই ১৪ জনকে আগামী ১৮ নভেম্বর এই আদালতে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর।
এফএইচ/বিএ/জেআইএম