ভবদহে জলাবদ্ধতার পুনরাবৃত্তি পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৬ এএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৪
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

কয়েক দিনের টানা বর্ষণে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভবদহ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভবদহে জলাবদ্ধতার ঘটনার পুনরাবৃত্তিকে পদ্ধতিগত মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

সোমবার (৭ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় কমিশন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে মনিরামপুরের ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতা ও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি বিষয়ক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বর্ষা মৌসুম আসলেই একটি বিশেষ অঞ্চল প্লাবিত হওয়া এবং লাখ লাখ মানুষের দুর্দশা সৃষ্টি হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এর ফলে স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বছরের পর বছর ধরে মানবিক বিপর্যয় সত্ত্বেও এ বিষয়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া বা সমস্যার সমাধান না করা পদ্ধতিগত মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ বিষয়ে কমিশন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমোটো) গ্রহণ করেছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে মনিরামপুর উপজেলার ভবদহ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে এ অঞ্চলকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হয়নি। যশোর-খুলনা অঞ্চলের মানুষের দুঃখের একটি নাম হলো ভবদহ। বৃষ্টির মৌসুম আসলেই এই অঞ্চলের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটে। ভারী বৃষ্টি হলে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় ফসলের ক্ষেত, হাজার হাজার মাছের ঘের ও পুকুর। ক্ষতি হয় মানুষের কোটি কোটি টাকার সম্পদ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার আসে সরকার যায়, প্রকল্প আসে প্রকল্প শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ভবদহ এলাকার মানুষের সমস্যার কোনো সমাধান হয় না। বন্যা হলেই এখানকার মানুষ নওয়াপাড়া, খুলনা, যশোর ও মনিরামপুর শহর এলাকায় গিয়ে কেউ রিকশা বা ভ্যান চালায়, কেউ মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেউ শাপলা, কলমিশাক বিক্রি করে দিন চালান। সম্প্রতি টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের ফলে বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় রাস্তার ওপরে উঁচু জায়গায় টং ঘর বেঁধে বসবাস করছেন।

বিশেষ করে ছিয়ানব্বই এলাকার কুলটিয়া, লাখাইডাঙ্গা, নেহালপুর, পাতাকড়ি ও কপালিয়া অঞ্চল বেশি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা হাঁটু পানি ভেঙে, কেউবা বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজে যায় বলে সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, বছরের পর বছর একটি জনপদের জনগণের জীবনযাত্রায় বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এ ধরনের দুর্যোগের স্থায়ী সমাধান তাদের মানবাধিকারের দাবি। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে কার্যকর সমাধান নিরূপণ করে ব্যবস্থা নেবে বলে কমিশন প্রত্যাশা করে।

এ অবস্থায়, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং কেন এতদিনেও এ সমস্যার সমাধান করা যায়নি তা কমিশন জানতে চায়। আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছে কমিশন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।

এফএইচ/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।