৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা বাতিলে লিগ্যাল নোটিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিল চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পিএসসির চেয়ারম্যান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৪ জনকে এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিলের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নোটিশে রেফারেন্স হিসেবে যুক্ত করে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ২৪ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ নাভিলা কাশফি এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

এর মধ্যে গত ১৩ জুলাই ‘৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় ১৭ জনকে প্রশ্ন দেন সাজেদুল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১৭ জন প্রার্থী ছিল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলামের। প্রশ্ন সরবরাহের বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ১৩ জন পাস করেছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

পিএসসির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ৭ জুলাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিষ্ঠানটির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলামসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে সাজেদুলসহ ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কোন প্রক্রিয়ায় কোথা থেকে, কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয়, পরীক্ষার্থী সংগ্রহ ও তাদের কীভাবে প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানো হয়– সেসব বিষয়ে স্বীকার করেছেন তারা। একই সঙ্গে এ চক্রে জড়িত অন্য সদস্যদের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন তারা। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করছে সিআইডি। পাশাপাশি তদন্তে নাম আসা পিএসসির বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

সাজেদুল ২০ বছর ধরে পিএসসির অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাকে। তিনি এখন কারাগারে।

চাকরিতে প্রবেশের কিছুদিন পর সাজেদুল জানতে পারেন, পিএসসির সে সময়ের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী বিজি প্রেসের কর্মচারী আতিকুল ইসলামের মাধ্যমে পিএসসির বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করেন। প্রশ্নফাঁস করে অল্প সময়ে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার জন্য ওই চক্রে ঢোকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর আবেদ আলীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। প্রথম দিকে পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষায় আবেদ আলীকে অন্তত তিনজন প্রার্থী সংগ্রহ করে দিতেন সাজেদুল। বিনিময়ে পেতেন মোটা অঙ্কের টাকা। পরে বাড়াতে থাকেন প্রার্থী সংখ্যা।

একপর্যায়ে সাজেদুল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম একজন হয়ে ওঠেন। নিজেই প্রশ্ন ফাঁস করতেন। চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে সেই প্রশ্ন বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার মিরপুর এলাকার কথিত আবাসন ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেলের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হবে। গত ২৬ এপ্রিল এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সোহেলের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল তার, কারণ একই চক্রের লোক তারা। ৪৬তম বিসিএসের জন্য সাজেদুলের সংগ্রহ করা প্রার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষার্থীও ছিলেন। গত ৯ মে প্রিলির ফল প্রকাশ হয়। এতে মোট ১০ হাজার ৬৩৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এফএইচ/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।