শিক্ষার্থী ইয়ামিন হত্যা

হাসিনাসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৫ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিহত শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে গুলিতে শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৮ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়ামিনকে গুলির পর পুলিশের সাঁজোয়া যানে তুলে আবার সেখান থেকে ফেলা হয়।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চিফ প্রসিকিউর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন নিহতের মামা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুন কাদির। তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন সাকিল আহমাদ।

দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে আইনজীবী জানান, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বুকের বামপাশে গুলি করে। ইয়ামিনের বুকে অসংখ্য গুলির স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়।

এমতাবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকে। পরে ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে ইয়ামিনের পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেন। তখনো গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায়। এমতাবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ হতে আরেক পাশ ছুড়ে ফেলে দেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন

কোনো ধরনের ময়নাতদন্ত না করে এবং তৎক্ষণাৎ কোনো মৃত্যুসনদ না দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের মরদেহ হস্তান্তর করে। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ করলেও পুলিশ ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ছাত্র-জনতাকে হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করে। ইয়ামিনের পরিবারের দায়িত্বশীল সদস্যদের ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মৃত্যু নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে সংবাদ মাধ্যমে তথ্য দিতে বারণ এবং মামলা না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। উদ্ভূত বিশেষ পরিস্থিতিতে ইয়ামিনের পরিবার তাকে সাভার ব্যাংক টাউন কবরস্থানে দাফন করে।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ১৮ জুলাই সাভারে এপিসি থেকে গুলি করে একটি ছেলেকে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে দেয়। তিনি এমআইএসটি এর ছাত্র । হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি। তার মামা প্রধানমন্ত্রীসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ভারতে অবস্থান করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকেরটিসহ মোট ৩০টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি চিফ প্রসিকিউটর বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো তদন্ত সংস্থায় দাখিল করা হয়।

এফএইচ/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।