শামসুদ্দিনসহ ৪ জনের ফাঁসি, একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড


প্রকাশিত: ০৬:২৮ এএম, ০৩ মে ২০১৬

একাত্তরে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের পাঁচ রাজাকারের মধ্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আদালত বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে (ফায়ারিং স্কোয়াড) দণ্ড কার্যকর করা যাবে।

রায়ে পালাতক আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আইজিপির মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে। রায় প্রকাশের পর পালাতক আসামিদের গ্রেফতার বা আত্মসর্মপণ করার পর থেকে দণ্ড কার্যকর করা যাবে এবং রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেয়া ২৩ তম রায়।

রায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের দুই সহোদর অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একজনকে দেয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দু’জন হলেন রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান ও হাফিজ উদ্দিন। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন রাজাকার আজহারুল ইসলাম।

এই মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন শামসুদ্দিন আহমেদ। বাকি চারজন এখনো পলাতক। গত ১০ ও ১১ এপ্রিল প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে শামসুদ্দিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা এবং পলাতক চারজনের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান।

এর আগে প্রসকিউশনের পক্ষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) মোট ২৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী ছিল না। গত ১১ এপ্রিল এ মামলায় উভয়পক্ষে  শুনানি শেষে যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছিল।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ৩৩০ পৃষ্ঠা ও ৬২৮ প্যারার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়েন বিচারকরা। রায়ের প্রথম অংশ পড়েন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারর্দী। রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন অন্য সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। সর্বশেষে রায়ের মূল অংশ ও দণ্ড ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.  আনোয়ারুল হক।

একই মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ। আটক আসামি শামসুদ্দিনকে সকাল ৯টার পর কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে তাকে রাখা হয় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায়। পরে রায় ঘোষণার প্রাক্কালে তাকে বিচার কক্ষে আসামির কাঠগড়ায় আনা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাক্ষ্য প্রমাণ পেশ করা হয়। শুনানিতে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আটক আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। পলাতক অপর চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন।

এফএইচ/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।