চট্টগ্রাম

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রীসহ ২৮ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ এএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত/ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের অপহরণ-নির্যাতনসহ ১০ ধরনের অভিযোগে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। মামলায় নাম উল্লিখিত আসামিদের মধ্যে ২৮ জনই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটির আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী নূর ই খোদা বলেন, ‘আজ আদালতে মামলার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এরপর আদালত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আসার পর মামলাটি গ্রহণ করা হবে কি না সে বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।’

মামলার বাদী হাসিনা মমতাজ (৫৫) নগরীর কোতোয়ালি থানার নজির আহমদ চৌধুরী রোড বাই লেইন চেয়ারম্যান গলির বাসিন্দা সৈয়দ আবুল হাসেমের মেয়ে। সৈয়দ আবুল হাসেম চট্টগ্রাম নগর বিএনপির নেতা ছিলেন।

মামলার আবেদনে আন্দোলনরত ছাত্রদের অপহরণ করে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা, ৪ আগস্ট নিউ মার্কেট মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেওয়া, এরপর সেদিন চেরাগী পাহাড় মোড়ে আসা শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করা, এসব ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ না করা, গণমাধ্যমের গাড়ি ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অস্ত্র পৌঁছে দেওয়া, আন্দোলনের সময় অভিযোগকারীকে মারধর ও অপহরণের চেষ্টার মতো অভিযোগ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ‘বিভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা’ সংবাদ প্রচার, স্বৈরাচারী সরকারের অপকর্ম ও দুর্নীতি ‘ধামাচাপা দেওয়া’, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলা-নির্যাতনের ছবি প্রকাশ না করার অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনসহ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলর এবং যুবলীগ-ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাসহ মোট ৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া যেসব সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- দৈনিক আজাদীর শুকলাল দাশ, ঋত্বিক নয়ন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সময় টিভির কমল দে, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অনুপম শীল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব কাজী মহসিন, বিএফইউজের নেতা আজহার মাহমুদ, সাংবাদিক রতন কান্তি দেবাশীষ, উজ্জ্বল কান্তি ধর, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মিন্টু চৌধুরী ও উত্তম সেনগুপ্ত, সারাবাংলার ডটকমের রমেন দাশগুপ্ত, সমকালের মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন, দৈনিক পূর্বদেশের রাহুল দাশ নয়ন, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সুবল বড়ুয়া, দীপ্ত টিভির রুনা আনসারী, একুশে টেলিভিশনের রফিকুল বাহার, এমদাদুল হক বুলবুল, চট্টগ্রাম প্রতিদিনের আয়ান শর্মা, দৈনিক পূর্বকোণের বিশ্বজিৎ রাহা, দৈনিক আজাদীর আমিনুল ইসলাম মুন্না, ডিবিসি টেলিভিশনের মাসুদুল হক, রাশেদ মাহমুদ, আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্যাহ, ভোরের কাগজের সমরেশ বৈদ্য ও সি প্লাস টিভির সৌরভ ভট্টাচার্য।

এছাড়া রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও ফরিদ মাহমুদ, সাবেক নগর ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন ও নুর মোস্তফা টিনু, মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছোট ছেলে বোরহানুল হাসান, আওয়ামী লীগ নেতা শরাফতুল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম, খোরশেদ আলম চৌধুরী, জাহির রহমান সুমন, ওয়াসিম উদ্দিন, ব্ল্যাক শামীম, আরশেদুল আলম বাচ্চু, দিদারুল আলম মাসুম, সনৎ বড়ুয়া, সিরাজুল ইসলাম, জাকারিয়া দস্তগীর, এয়ার মোহাম্মদ ও আজিজ উদ্দিন চৌধুরীকে এই মামলায় আসামি করতে আবেদন করা হয়েছে।

এএজেড/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।