শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিন হত্যা মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে। এ তিন মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসব মামলা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে ঢাকা মহানগরের তিন থানাকে এসব মামলার অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনাসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে শোরুমের কর্মচারী হত্যা মামলা
কেরানীগঞ্জ লায়ন শোরুমের কর্মচারী নাদিমুল হাসান এলেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামে আদালত এলেনের মা কিসমত আরা মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি সূত্রাপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
অপর আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাঈদ খোকন, কাজী ফিরোজ রশীদ, অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার।
গত ১৯ জুলাই সূত্রাপুর থানাধীন কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের কাছে ওয়াসা পানির পাম্পের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছোঁড়া গুলিতে এলেন মারা যান।
শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক হত্যা মামলা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাংবাদিক হাসান মাহমুদকে খুনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে হাসান মাহমুদের স্ত্রী ফাতেমা মামলাটি করেন। আদালত অভিযোগটি খিলগাঁও থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবকে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সাবের হোসেন চৌধুরী, নজরুল ইসলাম বাবু, শাজাহান খান, মশিউর রহমান রাঙ্গা, এনায়েত উল্লাহ, এরফান সেলিম, লোটাস কামাল, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হাসান মাহমুদ সাংবাদিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৩১ জুলাই রাত দেড়টার দিকে উত্তরা মুগদাপাড়ার বাসা থেকে তিনি বের হন। রাতে আর বাসায় ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুজির পর জানতে পারেন সাদা পোশাকধারী অজ্ঞাতনামা লোক এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন লোক হাসান মাহমুদকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারেন গোড়ান ছাপড়া মসজিদের সামনে তার স্বামী পড়ে আছেন। ভোর ৫টার সময় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গুলি করে যুবক আল শাহরিয়ার হোসেনকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ২০০/৩০০ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের বাবা মো. মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে মামলার আবেদনটি এজাহার হিসেবে মোহাম্মদপুর থানাকে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরাফাত এ রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন এলাকায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কারের আন্দোলন করছিলেন। সেই আন্দোলনের ওপর পুলিশ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলি চালায়। তখন আল শাহরিয়ার হোসেন রাস্তা পার হতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
জেএ/জেএইচ