আদালতে সালমান-আনিসুল-দীপু মনি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২৪
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনিকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

শনিবার (২৪ আগস্ট) ৭টা ৪০ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করা হয়।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৪ আগস্ট) নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তাদের দুইজনের দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।

এদিকে গত সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে ডা. দীপু মনিকে রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মোহাম্মদ পুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের মামলার অভিযোগে মামলার বাদী আয়শা বেগম বলেন, আমার ছেলে শাহজাহান আলী নিউমার্কেট থানার বলাকা সিনেমা হলের গলির মুখে পাপোশের দোকানে কাজ করতো। প্রতিদিনের মতো ১৬ জুলাই সকাল ৯টার দিকে দোকানে কাজ করার জন্য যায়।

ওইদিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় একজন ব্যক্তি ছেলের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে আমাকে জানায়, শাহজাহান গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি। আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পপুলার হাসপাতালে যাই এবং জানতে পারি, আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পর মর্গে গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করি।

তখন বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে জানতে পারি, গত ১৬ জুলাই আমার ছেলে অজ্ঞাতপরিচয় কোটাবিরোধীদের কর্তৃক গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে সিটি কলেজের বিপরীত পাশে কাদের আর্কেড মার্কেটের সামনে পড়ে ছিল। এ ঘটনায় গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আয়শা বেগম (৪৫) একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে।

দীপু মনির মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করেন। ওই সব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র-জনতা নিহত ও আহত হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিলেন। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার অভিযোগে বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করতে বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

জেএ/এসআইটি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।