মে মাস জুড়ে দৃষ্টি আবারো সুপ্রিম কোর্টে
অবকাশ কালীন ছুটি শেষে আগামীকাল সোমবার (২ মে, ২০১৬) খুলছে সুপ্রীম কোর্ট। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত নিজামী, সাঈদী এবং মীর কাসেম আলীর মামলার কর্যক্রম চলবে পুরো মাস জুড়ে। ফলে সকলের দৃষ্টি আবরো সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দিকে।
জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট খোলার পর ৩ মে (মঙ্গলবার) হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াতের আমির ও চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে, জামায়াতের অপর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় আপিলে সাজা কমে অমৃত্যু কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে এবং পক্ষে রিভিউ করা হয়েছে। তবে মে মাসে এ মামলার শুনানি হবে কি না তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।
এদিকে, মুত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বদর কমান্ডার জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাশেম আলীর আপিলের পুর্ণাঙ্গ রায়ও শিগগিরই প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত ১১ এপ্রিল কিশোরগজ্ঞের দুই সহদর অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহম্মেদ ও ক্যাপ্টেন নাসির উদ্দিন আহম্মেদসহ ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষ আশা করছেন, শিগগিরই এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
ট্রাইব্যুনালে জামালপুরের আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেনসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ২৪তম সাক্ষী মো. এজাবুদ্দিন মিয়া জবানবন্দি শেষ হযেছে। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১৯ মে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রসিকিউশন আশা করছেন, মে মাসে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হতে পারে।
২০১০ সালের ২৫ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। মামলার সংখ্যা বাড়াতে এবং দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১২ সালের ২২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরো একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনালে মোট ২২টি মামলায় ২৬ জনকে দণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, এক জনের যাবজ্জীবন, একজনের ৯০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড সাজা প্রদান করা হয়েছে। সাজা প্রাপ্তদের মধ্যে পতালক রয়েছে ৫ জন।
বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে প্রায় ১২টি মামলা বিচার চলছে। ট্রাইব্যুনালের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে ১৭টি রায়ের। সর্বমোট আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে ৭টির। আপিল নিষ্পত্তির পরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ৪ জনের।
এদিকে, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে মীর কাশেম আলীর আপিলের পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। রায় প্রকাশিত হওয়ার পর আসামি পক্ষের রিভিউ করার পালা। একইসঙ্গে আপিল বিভাগে এখনো ৯টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে।
এফএইচ/আরএস/এমএস