অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা
অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে চট্টগ্রামে রাউজানের সদ্যসাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাউজানে গত ১৫ বছরে একতরফা শাসনের পর ফজলে করিমের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহ।
মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকিরা অজ্ঞাতনামা। আসামিদের মধ্যে অন্যতম হলেন- শাহাবুদ্দিন, সুজাতুল ইসলাম, টনি বড়ুয়া, লিটন দে, মো. আনোয়ার ও মোহাম্মদ মাসুদ। তারা ফজলে করিমের সহযোগী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী সবুজ তালুকদার বলেন, ‘আদালত মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সকালে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে অন্য আসামিরা রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহর বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাকে বাঁচানোর জন্য স্ত্রী-কন্যাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। তাণ্ডব চালানোর পর আসামিরা সাত ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১৫ হাজার টাকা ছাড়াও বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহকে আসামিরা অপহরণ করে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে। সেখানে তার মাথার চুল ও দাড়ি ফেলে দিয়ে নগ্ন অবস্থায় ছবি তুলে সেটা দেখানো হয় সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীকে। সেই ছবি ফেসবুকেও ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে ফজলে করিমের সহযোগী টনি বড়ুয়া মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ছয় লাখ টাকা চাঁদা চাইলে সিরাজদৌল্লাহর ভাই এসে তিন লাখ টাকা দিয়ে যান। তবে রাতে তাকে আবার শাহাবুদ্দিন আরিফ নামের একজনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে একটি সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে বসিয়ে আসামি লিটন দে পুরোনো একটি অস্ত্র এনে ট্যাক্সির পেছনের অংশে রাখেন। রাউজান থানার এসআই অজয় দেব শীল ও ইলিয়াছ এসে আরেকটি ট্যাক্সিযোগে সিরাজদৌল্লাহকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে এসআই অজয় সিরাজদৌল্লাহর স্ত্রীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। এ ঘটনার পরদিন ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাউজান থানায় সিরাজদৌল্লাহর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল, রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কারিমুল্লাহর স্যানিটারি দোকানের পাশ থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজদৌলা ওরফে সিরাজকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক (এলজি) ও একটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
এএজেড/বিএ/এমএস